ফেমিনিজম লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ফেমিনিজম লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

নারীবাদ, নারীবাদী সাহিত্য এবং বেগম রোকেয়ার নারীমুক্তি আন্দোলন-

feminism
নাজিব ওয়াদুদ
নারীমুক্তি, নারী স্বাধীনতা, লিঙ্গ বিতর্ক এবং নারীবাদ (Feminism) একেবারেই আধুনিক প্রপঞ্চ, এবং উদ্ভব প্রায় একইসঙ্গে ইউরোপ ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে। এই শব্দবন্ধগুলি বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বুদ্ধিবৃত্তিক আকার পায়, এবং শেষ দিকে জনমুখিনতা অর্জন করে। নারী স্বাধীনতার প্রশ্নটি শতাব্দীপ্রাচীন, তবে এর বুদ্ধিবৃত্তিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক আন্দোলনের ইতিহাসের শুরু মোটামুটি ১৮৩০ সাল থেকে। একধরনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে এটি ব্যাপ্ত হয় ১৯২০ সাল পর্যন্ত, এটা ছিল মূলতঃ নারীশিক্ষা ও ভোটাধিকার অর্জনের আন্দোলন। নারীবাদের ইতিহাসে এই কাল-পরিসরকে প্রথম পর্যায় বা তরঙ্গ ধরা হয়। দ্বিতীয় তরঙ্গ বা পর্যায়ের শুরু ১৯৬০ সাল থেকে, এটি সংগঠিত আন্দোলনের কাল। এই পর্যায়ে এসে নারী স্বাধীনতার প্রশ্নটি প্রকাশ্য ও বহুমাত্রিকতা লাভ করে, শুরু হয় এর বাস্তবায়ন ও অনুশীলনও। পরিবার ও সমাজে নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার, সর্বস্তরে চাকরি ও কাজ করার অধিকার, বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদ এবং গর্ভপাত ও জন্মনিয়ন্ত্রণের স্বাধীনতা, ইত্যাদি ছিল এর মূল বিবেচ্য বিষয়।

নারীবাদী সমাজতত্ত্ব: একটি অবলোকন

মোহাম্মদ হাসান ইমাম

সমাজবিজ্ঞানে নারীবিষয়কে নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে অবলোকন অর্থাৎ নারীবাদী পরিক্ষেপের অধিষ্ঠান দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। শ্রেণী, গোষ্ঠী, দল, ব্যষ্টি, সমষ্টি প্রভৃতি প্রত্যয়গুলোর সাহায্যে সমাজকাঠামোকে বিশ্লেষিত করার যে আনুপূর্বিক উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় সেখানে জ্ঞাত-অজ্ঞাতসারেই পুরুষদৃষ্টিকোণ চলে এসেছে।

সাহিত্যে রিয়ালিজম বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ও জগদীশ গুপ্ত

বাংলাসন ১৩৩৪-এ শ্রীজগদীশচন্দ্র গুপ্তের গল্পের বই  ‘বিনোদিনী’ প্রকাশিত হইলে শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রংশসা করছিলেন  “ছোটগল্পের বিশেষ রূপ ও রস তোমার লেখায় পরিস্ফুট দেখিয়া সুখী হইলাম” বইলা। এর প্রেক্ষিতে জগদীশ গুপ্ত ১৩৩৮-এ ছাপা হওয়া তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘লঘু-গুরু’র এক কপি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুররে পাঠান। বই পইড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এইটা নিয়া পরিচয় পত্রিকায় লিখেন। জগদীশ গুপ্তের উপন্যাসরে ভিত্তি কইরা তিনি সাহিত্যে অতি-রোমাণ্টিসজমের বিপরীতে অতি-রিয়ালিজমের সমালোচনা করেন। বাস্তবতা কী এবং কতোটা সাহিত্যে অ্যাকোমোডেড করা উচিত, এই বিষয়ে উনার মতামত দেন। জগদীশ গুপ্তও এই সমালোচনার একটা উত্তর করেন এর পরের বছর, তাঁর ‘উদয়-লেখা’ গল্প-সংকলনের (বাংলা ১৩৩৯) ভূমিকায়। উনারা দুইজনেই রিয়ালিজম/রিয়ালিস্টিক শব্দটাই লেখেন, কারণ সম্ভবত তখনো ইংরেজী ১৯৫২ সন আইসা হাজির হইতে পারে নাই।

গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক

উনিশ শতকের বৃটিশ সাহিত্যের সঠিক ইতিহাস পাঠ একেবারে অসম্ভব হবে যদি একথা মনে রাখা না যায় এই সময়ের সাম্রাজ্যবাদ ছিল ইংরেজদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রধানতম দিক। এই সাম্রাজ্যবাদকেই ইংরেজরা সে-সময় মনে করতো তাদের একমাত্র সামাজিক উপস্থাপনার ল্য। সাংস্কৃতিক অভিপ্রকাশের উৎপাদনে সাহিত্যের ভূমিকা অগ্রাহ্য করা ঠিক হবে না। এই দুইটি সুষ্পষ্ট 'সত্য' উনিশ শতকের বৃটিশ সাহিত্য পাঠে ক্রমাগত অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। এই ধারা আধুনিক সুরতে স্থানান্তর ও বিস্তারের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী প্রকল্পের সফলতায় যুক্ত হয়েছে।

নারীর রবীন্দ্রনাথ – শ্রেণীর রবীন্দ্রনাথ – সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ

rabindranath-tagore-1

বাংলা সাহিত্যে নারী এবং সাহিত্যে তাদের অবস্থান ও অবদান

তানিয়া হোসেন

সাহিত্যে নারী লেখকদের সর্বদাই একটু ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা হয়। এ প্রথা সর্বকালের এবং সর্বযুগের। ইংরেজি সাহিত্যর ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায় যে সাহিত্য মূলত পুরুষদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কখনো কখনো নারী লেখকদের লেখাকে বিভিন্ন সাহিত্যে অবমূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। প্রবন্ধটি আমি বাংলা সাহিত্যে নারী এবং সাহিত্যে তাদের অবস্থান ও অবদান নিয়ে কথা বলবো। তবে আমার সব সময় যেটা মনে হয়েছে যে সাহিত্যকে সাহিত্যের দৃষ্টিতেই মূল্যায়ন করা প্রয়োজন তা লেখকের লিঙ্গ ভেদে মূল্যায়ন করা সাহিত্য এবং সাহিত্যিকদের প্রতি অবিচার করা হয়ে থাকে।

নারীবাদ সম্পর্কে

ভূমিকা :
একজন মানুষ হিসেবে নারীর তার পরিপূর্ণ অধিকারের দাবি হল নারীবাদ। নারী স্বাধীনতা আলোচনা প্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নারীবাদ। বিশ্বজুড়ে যে বিদ্যমান লিঙ্গভিত্তিক শ্রম বিভাগ পুরুষের উপর রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি এসব সামাজিক পরিমন্ডলের দায়িত্ব অর্পন করে এবং নারীকে গোটা সংসারের বোঝা বহনকারী বিনা মজুরীর বাদিগীরির দিকে ঠেলে দেয় তাকে চ্যালেঞ্জ করে নারীবাদ। নারীবাদ বিরাজমান ক্ষমতা কাঠামো, আইন-কানুন, রীতি-নীতি যা নারীকে বশ্য, অধীনস্ত ও হীন করে রাখে ; তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। নারীবাদ হলো একটি সামাজিক আন্দোলন যা নারীর গৎবাধা ভূমিকা ও ইমেজের পরিবর্তন, লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য বিলোপ এবং পুরুষের মতো নারীর সমান অধিকার অর্জনের প্রয়াসী। নারীর স্বাধীনতা অর্থবহ করার লক্ষ্যে যে আন্দোলন, যুক্তি ও তত্ত্ব বিভিন্ন চিন্তবিদগণ প্রদান করেছেন তাকে সাধারণভাবে নারীবাদ আখ্যা দেয়া যায়। নারীবাদ নারীর সামগ্রীক কল্যাণের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। নারীবাদ ও নারী স্বাধীনতা অভিন্ন নয়। নারীবাদী গবেষকদের মধ্যে মত ও পথের ভিন্নতা রয়েছে। কিন্তু প্রত্যেক নারীবাদী গবেষক নারীর কল্যাণের লক্ষ্যে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে মতবাদ দিলেও তাদের উদ্দেশ্য হলো নারীর স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ।

নোরা : একটি নারীবাদী কবিতা

মাসুদুজ্জামান 

My book is poetry, and if it is not poetry, then it will be.
Henrik Ibsen
.................................................................................................
বিশ্বসাহিত্যের এক অবিস্মরণীয় সৃষ্টি হেনরিক ইবসেনের (১৮২৮-১৯০৬) আ ডলস্ হাউজ (১৮৭৯)। নোরা হেলমার চরিত্রকে ঘিরেই এর যত খ্যাতি। শেক্সপীয়রের কালজয়ী নাটকের চরিত্রগুলোর পরে আর কোনো নাট্যচরিত্র নিয়ে এতটা আলোড়ন তৈরি হয়নি। শেক্সপীয়র তাঁর নাটকের কাহিনী গ্রহণ করেছিলেন ইতিহাস থেকে। অন্যদিকে সমকালীন মানুষের জীবনযাপন ছিল ইবসেনের নাট্যকাহিনীর উৎস। ইবসেনকে তাই বলা হয় ইউরোপীয় বাস্তববাদী নাট্যধারার জনক। লক্ষ করলে দেখা যাবে নোরা চরিত্রের মাধ্যমেই এই বাস্তবতার চূড়ান্ত অভিব্যক্তি ঘটেছিল। নোরা এমনই এক সৃষ্টি, কালের পরম্পরায় যার আবেদন এখনও নিঃশেষ হয়ে যায়নি।

বাংলা সাহিত্যে নারীবাদী পাঠ : কিরণমালা

বাংলা সাহিত্যে নারীবাদী ভাবনা


বাংলা সাহিত্যে নারীবাদ সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে নারীবাদ বলতে কি বোঝায় তারও একটু আলোচনার প্রয়োজন। এই বিষয় নিয়ে বাংলায় লেখালেখি খুব একটা হয় নি। অনেকের মতে তার কারণ নারীবাদ বিষয়টাই একেবারে বিদেশী, পাশ্চাত্যের রপ্তানি। এ নিয়ে যা আলাপ আলোচনা আজকাল হচ্ছে, তা আমাদের নিজেদের কথা নয়। বিদেশী চিন্তাধারা জোর করে আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে; বাঙালীর মুখে বিলিতি বুলি মানায় না। সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ ত্যাগ করাই উচিত।

নারীবাদ কী

শাহীন রহমান
একজন মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ অধিকারের দাবি হলো নারীবাদ (ঋবসরহরংস)। আধুনিক সংজ্ঞায় নারীবাদ হচ্ছে পরিবার, কর্মক্ষেত্র ও সমাজে নারীর হীন মর্যাদা সম্পর্কে সচেতনতা অর্জন এবং এই অবস্থা পরিবর্তনে নারী ও পুরম্নষের সচেতন সক্রিয় উদ্যোগ। বিশ্বজুড়ে যে বিদ্যমান শ্রম বিভাগ পুরম্নষের ওপর রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি এসব সামাজিক পরিমণ্ডলের দায়িত্ব অর্পণ করে এবং নারীকে গোটা সংসারের বোঝা বহনকারী বিনা মজুরির বাঁদিগিরির দিকে ঠেলে দেয় তাকে চ্যালেঞ্জ করে নারীবাদ। নারীবাদ বিরাজমান ক্ষমতা কাঠামো, আইনকানুন, রীতিনীতি যা নারীকে বশ্য, অধীনস্থ ও হীন করে রাখে; তার বিরম্নদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

ভার্জিনিয়া উলফ-এর সুইসাইড নোট

লুনা রুশদী

প্রায় সারারাত জাগলাম লেনর্ড উলফের কাছে লেখা ভার্জিনিয়া উলফের সুইসাইড নোটের কথা ভাবতে ভাবতে। ইউটিউবে দেখলাম দ্যা আওয়ারস মুভির দৃশ্য। দেখলাম চিঠি লেখার সময় কলম ধরা হাত ইতস্তত করতেছে, একই সাথে গাছগাছালি, পাখির ডাকের মধ্যে ভার্জিনিয়া (নিকোল কিডম্যান) অস্থির হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছালেন উস নদীর কিনারে। নদীর ঘোলা পানি নির্বিকার বইতেছে। দরজা খুইলা ঘরে ঢুকতেছেন লেনর্ড উলফ। নিকোল কিডম্যানের কণ্ঠে চিঠির কথাগুলা শুনতে শুনতেই দর্শক দেখতেছে একটা ভারি পাথর কোটের পকেটে ঢুকাইয়া আস্তে আস্তে ভার্জিনিয়া নাইমা যাইতেছেন নদীর একদম মধ্যে