উনিশ শতকের বৃটিশ সাহিত্যের সঠিক ইতিহাস পাঠ একেবারে অসম্ভব হবে যদি
একথা মনে রাখা না যায় এই সময়ের সাম্রাজ্যবাদ ছিল ইংরেজদের সাংস্কৃতিক
পরিচয়ের প্রধানতম দিক। এই সাম্রাজ্যবাদকেই ইংরেজরা সে-সময় মনে করতো তাদের
একমাত্র সামাজিক উপস্থাপনার ল্য। সাংস্কৃতিক অভিপ্রকাশের উৎপাদনে সাহিত্যের
ভূমিকা অগ্রাহ্য করা ঠিক হবে না। এই দুইটি সুষ্পষ্ট 'সত্য' উনিশ শতকের
বৃটিশ সাহিত্য পাঠে ক্রমাগত অগ্রাহ্য করা হচ্ছে। এই ধারা আধুনিক সুরতে
স্থানান্তর ও বিস্তারের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী প্রকল্পের সফলতায় যুক্ত
হয়েছে।
শুধুমাত্র বৃটিশ সাহিত্য নয়, উপরন্তু সাম্রাজ্যবাদের সময়কালে ইউরোপীয় উপনিবেশি সাহিত্যের অধ্যয়নে এইসব 'সত্য' স্মরণ করা জরুরি। এতে আজকের দিনের কথিত 'তৃতীয় বিশ্ব' কে কিভাবে 'বিশ্বায়িত' করা হয়েছে তার সাহিত্য ইতিহাসের ব্যাখ্যা পাব। তৃতীয় বিশ্বকে দূরবর্তী সংস্কৃতি গণ্য করে, এর গৌরবময় সমৃদ্ধ সাহিত্যিক উত্তরাধিকারকে ইংরেজি অনুবাদে পুনঃরুদ্ধার, স্পষ্টীকরণ ও পাঠ্যসূচীভুক্ত করে তৃতীয় বিশ্বের পরিচয়কে অবমূল্যায়িত করা হয়। সাহিত্য শৃঙ্খলের সাম্রাজ্যে এভাবে বিশ্বায়িত হওয়া আমরা ভুলে যাই।
এটা খুবই দুঃখজনক যে উত্থিত নারীবাদী সমালোচনার পরিপ্রেেিত সাম্রাজ্যবাদের স্বতঃসিদ্ধতার মাধ্যমে গজিয়ে উঠেছে। ইউরোপ ও অ্যাংলো-আমেরিকান নারী বিষয়ক সাহিত্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্তুষ্টিবোধ উঁচু নারীবাদী আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে। এর সমর্থন ও নিয়ন্ত্রণে তৃতীয় বিশ্বের সাহিত্যের বিবেচনায় তথ্য-বিকৃতি ঘটে, এর প্রকাশে প্রায়শই থাকে আত্ম-সচেতন 'অ-তত্ত্বীয়' নিয়মপদ্ধতি।
এই প্রবন্ধের মাধ্যমে, নারীবাদের জনপ্রিয় পাঠকৃতি বলে স্বীকৃত জেন আয়ার (ব্রনটি [1947] 1980) গ্রন্থের উপস্থাপন করতে চেষ্টা করবো আজকের দিনের 'তৃতীয় বিশ্ব' কে 'বিশ্বায়িত' (ডড়ৎষফরহম) করার ক্রিয়াপদ্ধতি। আমি উপন্যাসের আখ্যানে পেঁৗছি, হৃদয়াঙ্গম করি এবং গাঠনিক কৌশল সন্ধানে করি। আমি পড়ি ওয়াইড সারাগাসো সী (রাইস 1968), তা জেন আয়ারের পুর্নলেখন এবং এর বিশ্লেষন হল ফ্রাঙ্কস্টাইন _ বলা যায় বিশ্বায়িত করার একটি অবিনির্মাণ, যেমনটি জেন আয়ার উপন্যাস।
উল্লেখ করার দরকার নাই যে আমার অনুসন্ধানের উদ্দেশ্য হল মুদ্রিত 'গ্রন্থ', এর 'গ্রন্থকার' নয়। সে-রকম পার্থক্য তৈরি অবশ্যই অবিনির্মানের পাঠকে উপো করে। অবিনির্মানীয় সমালোচনা ধারা গ্রন্থের বাঁধন আলগা করে, মৌখিক পাঠ ও নামীয় ব্যাক্তির ('চারলোট ব্রনটি) জীবনীর মধ্যকার বিরোধী অবস্থান বাতিল করে; এবং এই দুইটিকে দেখা হয় একটিকে অন্যটির 'লেখার দৃশ্য'র মতো। এই ধরনের পাঠে যে ব্যাক্তি লেখে 'আমার জীবন', বইটি তার লিখিত জীবনীর ধারক হলেও বড় জোর ব্যাক্তির মনস্তাত্তি্বক পরিসরের (অন্য নাম পাওয়া যেতে পারে) উৎপাদন; প্রকাশনা ও বিপননের জগতে বইটি পরিশেষে চিহ্নিত হয় নির্জলা 'সামাজিক' হিসাবে। এভাবে ব্রনটির 'জীবন' স্পর্শ করা এখানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা কৌশলগতভাবে প্রয়োজনবাদের আশ্রয় নিয়ে, যা মার্কিনী মূলধারার নারীবাদের অর্জিত জরুরী সুবিধাদি খর্ব করে না, সবসময় অনুমিত দ্বিপদী (নরহধৎু) বিরোধী অবস্থা বজায় রাখে, যেমন: গ্রন্থ ও গ্রন্থকার, ব্যাক্তি ও ইতিহাস। এবং আমার পাঠ সম্মানিত ব্যাক্তি শিল্পীর দুর্বলতা খুঁজবে না, এরকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রবন্ধ শুরু করতে পারি। যদি যৎসামান্যও তেমন ঘটে, এই পাঠ সাম্রাজ্যবাদী ইতিহাসের আখ্যানের বিরুদ্ধে ক্রোধ উস্কে দেয়, তবে তা তাদের পাণ্ডুলিপির বিষয়ের জন্যই। আমি এই প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছি, নারীবাদকে যে চেহারা-সুরতে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে, তারচেয়ে নারীবাদী ব্যাক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদেস ঐতিহাসিক প্রেেিত একে প্রতিষ্ঠা করা ।...
তিন নারীর গ্রন্থপাঠ এবং সাম্রাজ্যবাদের পর্যালোচনা : স্পীভাক
ভাষান্তর: ফকরুল চৌধুরী
শুধুমাত্র বৃটিশ সাহিত্য নয়, উপরন্তু সাম্রাজ্যবাদের সময়কালে ইউরোপীয় উপনিবেশি সাহিত্যের অধ্যয়নে এইসব 'সত্য' স্মরণ করা জরুরি। এতে আজকের দিনের কথিত 'তৃতীয় বিশ্ব' কে কিভাবে 'বিশ্বায়িত' করা হয়েছে তার সাহিত্য ইতিহাসের ব্যাখ্যা পাব। তৃতীয় বিশ্বকে দূরবর্তী সংস্কৃতি গণ্য করে, এর গৌরবময় সমৃদ্ধ সাহিত্যিক উত্তরাধিকারকে ইংরেজি অনুবাদে পুনঃরুদ্ধার, স্পষ্টীকরণ ও পাঠ্যসূচীভুক্ত করে তৃতীয় বিশ্বের পরিচয়কে অবমূল্যায়িত করা হয়। সাহিত্য শৃঙ্খলের সাম্রাজ্যে এভাবে বিশ্বায়িত হওয়া আমরা ভুলে যাই।
এটা খুবই দুঃখজনক যে উত্থিত নারীবাদী সমালোচনার পরিপ্রেেিত সাম্রাজ্যবাদের স্বতঃসিদ্ধতার মাধ্যমে গজিয়ে উঠেছে। ইউরোপ ও অ্যাংলো-আমেরিকান নারী বিষয়ক সাহিত্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্তুষ্টিবোধ উঁচু নারীবাদী আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে। এর সমর্থন ও নিয়ন্ত্রণে তৃতীয় বিশ্বের সাহিত্যের বিবেচনায় তথ্য-বিকৃতি ঘটে, এর প্রকাশে প্রায়শই থাকে আত্ম-সচেতন 'অ-তত্ত্বীয়' নিয়মপদ্ধতি।
এই প্রবন্ধের মাধ্যমে, নারীবাদের জনপ্রিয় পাঠকৃতি বলে স্বীকৃত জেন আয়ার (ব্রনটি [1947] 1980) গ্রন্থের উপস্থাপন করতে চেষ্টা করবো আজকের দিনের 'তৃতীয় বিশ্ব' কে 'বিশ্বায়িত' (ডড়ৎষফরহম) করার ক্রিয়াপদ্ধতি। আমি উপন্যাসের আখ্যানে পেঁৗছি, হৃদয়াঙ্গম করি এবং গাঠনিক কৌশল সন্ধানে করি। আমি পড়ি ওয়াইড সারাগাসো সী (রাইস 1968), তা জেন আয়ারের পুর্নলেখন এবং এর বিশ্লেষন হল ফ্রাঙ্কস্টাইন _ বলা যায় বিশ্বায়িত করার একটি অবিনির্মাণ, যেমনটি জেন আয়ার উপন্যাস।
উল্লেখ করার দরকার নাই যে আমার অনুসন্ধানের উদ্দেশ্য হল মুদ্রিত 'গ্রন্থ', এর 'গ্রন্থকার' নয়। সে-রকম পার্থক্য তৈরি অবশ্যই অবিনির্মানের পাঠকে উপো করে। অবিনির্মানীয় সমালোচনা ধারা গ্রন্থের বাঁধন আলগা করে, মৌখিক পাঠ ও নামীয় ব্যাক্তির ('চারলোট ব্রনটি) জীবনীর মধ্যকার বিরোধী অবস্থান বাতিল করে; এবং এই দুইটিকে দেখা হয় একটিকে অন্যটির 'লেখার দৃশ্য'র মতো। এই ধরনের পাঠে যে ব্যাক্তি লেখে 'আমার জীবন', বইটি তার লিখিত জীবনীর ধারক হলেও বড় জোর ব্যাক্তির মনস্তাত্তি্বক পরিসরের (অন্য নাম পাওয়া যেতে পারে) উৎপাদন; প্রকাশনা ও বিপননের জগতে বইটি পরিশেষে চিহ্নিত হয় নির্জলা 'সামাজিক' হিসাবে। এভাবে ব্রনটির 'জীবন' স্পর্শ করা এখানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা কৌশলগতভাবে প্রয়োজনবাদের আশ্রয় নিয়ে, যা মার্কিনী মূলধারার নারীবাদের অর্জিত জরুরী সুবিধাদি খর্ব করে না, সবসময় অনুমিত দ্বিপদী (নরহধৎু) বিরোধী অবস্থা বজায় রাখে, যেমন: গ্রন্থ ও গ্রন্থকার, ব্যাক্তি ও ইতিহাস। এবং আমার পাঠ সম্মানিত ব্যাক্তি শিল্পীর দুর্বলতা খুঁজবে না, এরকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রবন্ধ শুরু করতে পারি। যদি যৎসামান্যও তেমন ঘটে, এই পাঠ সাম্রাজ্যবাদী ইতিহাসের আখ্যানের বিরুদ্ধে ক্রোধ উস্কে দেয়, তবে তা তাদের পাণ্ডুলিপির বিষয়ের জন্যই। আমি এই প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছি, নারীবাদকে যে চেহারা-সুরতে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে, তারচেয়ে নারীবাদী ব্যাক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদেস ঐতিহাসিক প্রেেিত একে প্রতিষ্ঠা করা ।...
তিন নারীর গ্রন্থপাঠ এবং সাম্রাজ্যবাদের পর্যালোচনা : স্পীভাক
ভাষান্তর: ফকরুল চৌধুরী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন