অদ্বৈত মল্লবর্মণ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অদ্বৈত মল্লবর্মণ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

‘তিতাস একটি নদীর নাম’: নিম্নবর্গ মানুষের দুঃখগাথা

বীরেন মুখার্জী

‘তিতাস একটি নদীর নাম। তার কূলজোড়া জল, বুকভরা ঢেউ, প্রাণভরা উচ্ছ্বাস। স্বপ্নের ছন্দে সে বহিয়া যায়। ভোরের হাওয়ায় তার তন্দ্রা ভাঙ্গে, দিনের সূর্য তাকে তাতায়; রাতে চাঁদ ও তারারা তাকে নিয়া ঘুম পাড়াইতে বসে, কিন্তু পারে না।’ এ কথাগুলো ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ উপন্যাসের শুরুতে লিখেছিলেন অদ্বৈত মল্লবর্মণ। বাংলা সাহিত্যে নদীকেন্দ্রিক উপন্যাসের মধ্যে নিম্নবর্গ মানুষের আখ্যানসমৃদ্ধ ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ অমরকীর্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। নদী অববাহিকায় বসবাসরত মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে এ উপন্যাসে। ‘ধীবর’ বা ‘মালো’ সম্প্রদায়ের মানুষ হিসেবে অদ্বৈত মল্লবর্মণ গভীর অন্তর্দৃষ্টিতে দেখেছেন এ সমাজের জীবনসংগ্রামের নিষ্ঠুর চিত্র। বলা যায়, প্রতিকূল সংঘাতে ক্রমে মুছে আসা ‘মালো’ জীবনের সারাৎসার তিনি আঁকতে সক্ষম হয়েছেন এ উপন্যাসে।

তিতাস একটি নদীর নাম : বাস্তুচ্যুত শিল্পীর যন্ত্রণা

খোরশেদ আলম

অদ্বৈত মল্লবর্মণ দেখিয়েছেন- মানুষের জীবনের বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও অমোঘ প্রকৃতি ও প্রবহমান কালের সত্য তার ট্র্যাজিক জীবনের মূল। এই ট্র্যাজেডি আবার ব্যক্তিমানুষের একার নয়; সমগ্র সমাজব্যাপী এক নিরুচ্চার সত্যের প্রতিনিধিত্ব করে সে ক্রমশঃ ব্যক্তিমানুষেরই বেদনায় অভিষিক্ত। অবশ্য ব্যক্তিজীবনের বোধ এ-উপন্যাসে থাকলেও তা ব্যক্তিসর্বস্ব হয়ে ওঠে না। মধ্যবিত্তিক জীবন কাঠামোর বাইরে তা এক নিরেট বাস্তবতার প্রতিচ্ছায়া। নিম্নজীবী মানুষের কণ্ঠস্বরকে বাহ্যিক অর্থে নয় বরং অভিজ্ঞতার আলোকে শিল্প রচনার এক অনুভবী বাস্তবতার নাম তিতাস একটি নদীর নাম উপন্যাস।