পোস্টকলোনিয়াল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
পোস্টকলোনিয়াল লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

পোস্টকলোনিয়াল বাঙালি মেয়েদের কবিতায় প্রান্তিক নারীমুখ


খনা যেদিন বচন লেখা শুরু করলেন সেই মূহুর্ত থেকেই বাঙালি মেয়েদের কবিতা লেখা শুরুযে খনার খ্যাতি সহ্য করতে না পেরে স্বামী ও শ্বশুর মিলে তার জিভ কেটে নিয়েছিল মধ্যযুগের বাংলায় । বাঙালি ঘরের ছোটবেলায় মা দিদিমার কাছে আমরা সকলে শুনেছি এই কাহিনীকিন্তু মোলায়েম সেই গল্পকথকের মধ্যে ভয়ঙ্কর ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের আভাসটকুও ছিলনা। আজ সে নিষ্ঠুর কিংবদন্তীর দিকে ফিরে তাকিয়ে ভাবি সেই বোবাকরণ শুধুমাত্র খনার ব্যক্তিগত দূর্ঘটনা ছিলনা বরং তা ছিল বাঙালি মেয়েদের কণ্ঠরোধের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ।

এডওয়ার্ড সাঈদ এবং উত্তর উপনিবেশ বিরোধী লড়াই

হুমায়ুন আজাদের কবিতা দিয়ে শুরু করা যাক। ...........আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে/আমি গান গাইতে চেয়েছিলাম আমার আপন সুরে/ওরা আমার কন্ঠে পুরে দিতে চেয়েছিল ওদের শ্যাওলাপড়া সুর/আমি আমার মত স্বপ্ন দেখতে চেয়েছিলাম/ওরা আমাকে বাধ্য করেছিল ওদের মত ময়লাধরা স্বপ্ন দেখতে/আমি আমার মত দাঁড়াতে চেয়েছিলাম/ওরা আমাকে নির্দেশ দিয়েছিল ওদের মত মাথা নিচু ক’রে দাঁড়াতে/আমি আমার মতো কথা বলতে চেয়েছিলাম/ওরা আমার মুখে ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছিলো ওদের শব্দ ও বাক্যের আবর্জনা/আমি খুব ভেতরে ঢুকতে চেয়েছিলাম/ওরা আমাকে ওদের মতোই দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছিলো বাইরে/ওরা মুখে এক টুকরো বাসি মাংস পাওয়াকে ভাবতো সাফল্য/ওরা নতজানু হওয়াকে ভাবতো গৌরব/ওরা পিঠের কুঁজকে মনে করতো পদক/ওরা গলার শেকলকে মনে করতো অমূল্য অলঙ্কার/আমি মাংসের টুকরো থেকে দূরে ছিলাম। এটা ওদের সহ্য হয় নি/আমি নতজানু হওয়ার বদলে বুকে ছুরিকাকে সাদর করেছিলাম/এটা ওদের সহ্য হয় নি/আমি গলার বদলে হাতেপায়ে শেকল পরেছিলাম। এটা ওদের সহ্য হয় নি/আমি অন্যদের সময়ে বেঁচে ছিলাম। আমার সময় তখনো আসেনি।

উত্তর-ঔপনিবেশিকতার আলোকে উইলিয়াম শেক্সপিয়রের দ্য টেম্পেস্ট

কামালউদ্দিন নীলু



ভূমিকা

উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্বটি উপনিবেশ স্থাপনকারী ও উপনিবেশের শোষিতদের মধ্যে সৃষ্ট রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উত্তেজনা এবং মনস্তাত্ত্বিক সংঘর্ষের ফসল। আমি মনে করি, এই তত্ত্বটি ভেঙে ফেলবে ইউরোপকেন্দ্রিকতাকে এবং খোলা চোখে দেখিয়ে দেবে ইউরোপীয় মূল্যবোধ ও ইউরোপীয়দের তৈরিকৃত মানদণ্ড কোনোভাবেই সর্বজনীন নয়। এটা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বুঝিয়ে দেবে একই ঐতিহাসিক ঘটনা ব্যাখ্যা করা যায় যথাক্রমে ভিন্ন-ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, জাতিগত মানদণ্ড ও মূল্যবোধ অনুসারে, যেখানে গৃহীত মূল্যবোধ পরিবর্তিত হয়ে পড়বে পুনঃস্থাপনের ওপর ভর করে, যা চিহ্নিত করবে একটি পুনর্নির্মাণ কাঠামো, এই পুনর্নির্মাণ কাঠামো তৈরি হবে একটি সংস্কারধারার মধ্য থেকে। আমার বিশ্বাস, এই প্রবন্ধটি প্রশ্নবিদ্ধ করবে ঔপনিবেশিকতাবাদের প্রদত্ত কারণগুলোকে। আমি মনে করি, এটা সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থকে ভিত্তি করে গঠিত পূর্বের কাঠামোকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে, যা প্রকাশ করে দেবে পাশ্চাত্যের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থকে; যে স্বার্থের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঔপনিবেশিকতাবাদ।

উত্তর-ঔপনিবেশিক নিসর্গতত্ত্ব


গত তিন দশকব্যাপী সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ এবং উপনিবেশবাদের সমালোচনা করে প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। এসব গ্রন্থ ও প্রবন্ধে লেখকদের দৃষ্টিভঙ্গি, তথ্য বিশ্লেষণ এবং মতামতের মধ্যে যথেষ্ট ভিন্নতা থাকলেও এগুলোকে ‘উত্তর-উপনিবেশবাদী’ বলে শ্রেণীকৃত করা হয়। তার কারণ এসব রচনার সাধারণ আলোচ্য বিষয় ঔপনিবেশিক শাসন, তার প্রক্রিয়া ও কুফল এবং তার প্রতিক্রিয়া ও মোকাবেলা।