জীবনানন্দ দাশ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
জীবনানন্দ দাশ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

জীবনানন্দের কন্যা মঞ্জুশ্রী : এক পলকের দেখা

 মলয়চন্দন মুখোপাধ‍্যায়

জীবনানন্দতনয়া মঞ্জুশ্রী দাশকে জীবনে একবার-ই দেখেছিলাম। কথা হয়েছিল যৎসামান‍্য। কিন্তু  সেই সামান‍্যই অসামান‍্য স্মৃতি, যা আমৃত‍্য লালন করে যাবো।

            অকুস্থল মহাকরণ, কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংস নামে যা খ‍্যাত। সময় পেলে ওখানকার  তথ‍্য ও সংস্কৃতিবিভাগে চলে যেতাম। আবৃত্তিকার প্রদীপ ঘোষ, গল্প ও উপন‍্যাসকার বিভূতিভূষণ-আত্মজ তারাদাস বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়, অনূনয়দা-অমিতাভদা-অংশুদা-দীপঙ্করদের সঙ্গে  আড্ডা হতো খুব। একটা সারস্বত পরিবেশ ছিল সেখানে।

জীবনানন্দের মদের ফোঁটা

আজফার হোসেন

জীবনানন্দ দাশ তাঁর ‘অবসরের গান’ নামের কবিতায় একটি পঙক্তি ব্যবহার করেন এভাবে—‘মদের ফোঁটার শেষ হয়ে গেছে এ-মাঠের মাটির ভেতর’। আপাতদৃষ্টিতে এখানে মদের হাফিজীয় চিত্রকল্পে বিন্দুর অন্তিমতা নির্দেশিত হলেও বিন্দুর অন্তহীনতার অনুষঙ্গও জাগ্রত হয়, যখন ‘মাঠের মাটির’ চিত্রকল্পটা হাজির হয়। বিন্দু নিজেই একইসঙ্গে কবিতায় ও গণিতে অন্তহীনতার সঙ্গে অন্তিমতার টেনশান তৈরি করতে পারে।

জীবনানন্দের গল্পের নিরানন্দ জীবন

ফারুক মঈনউদ্দীন

জীবনানন্দ দাশের গল্প বা উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য উন্মোচন করতে গিয়ে সবচেয়ে বড় যে বিষয়টা ধরা পড়ে সেটি হচ্ছে, তাঁর রচনাগুলো প্রায়ই আত্মজৈবনিক উপাদান এবং দাম্পত্য ও দাম্পত্যবহির্ভূত সম্পর্কের টানাপোড়েনে, প্রেম-অপ্রেমে—দাম্পত্যক্লান্ত নর-নারীর অতৃপ্ত জীবনের যন্ত্রণায় বিধুর। অসফল প্রেম, অতৃপ্ত দাম্পত্য, বেকারত্ব ও দারিদ্র্য তাঁর গল্পগুলোকে পৌনঃপুনিকতায় ক্লান্ত করলেও পাঠক তাঁর জীবনবেদনার আরেকটি দিকের সন্ধান পান, যা সাধারণত জীবনীকারেরাই দিতে পারেন।

ছোটগল্প ও আগামীর জীবনানন্দ দাশ

বদরুল হায়দার 


জীবনানন্দ দাশ মূলত কবি। বাংলা আধুনিক কবিতার জনক হিসেবে তার কবিতা 

যেভাবে মহীয়ান ও চিরভাস্বর, তেমনি গল্পও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।


জীবনানন্দ দাশ আধুনিক কবিদের মধ্যে অন্যতম। জনপ্রিয়তার নিরিখে সমালোচক ও বিদগ্ধ পাঠকের দৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ কবি। নিঃসঙ্গতার কবি হিসেবে জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্যের অন্তরালে বাস করেছেন এবং খুঁজে নিয়েছেন সুপ্ত আনন্দ-বেদনাকে। রবীন্দ্র বলয়মুক্ত কবিতা নির্মাণের পাশাপাশি জীবনানন্দ দাশ বাংলা ছোট গল্পেও অনবদ্য স্বাক্ষর রেখেছেন। জীবনের অন্বেষণ করতে গিয়ে শুধু কবিতাই লেখেননি, একাধারে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখেছেন।

বনলতা সেনের খোঁজে

বাংলার মুখ
কে এম আব্দুস সালাম 

প্রকাশের পর থেকেই বনলতা সেনকে নিয়ে সাহিত্যপ্রেমী মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন। ‘বনলতা সেন’ কবিতায় সাকল্যে তিনবার বনলতা সেনের নাম নিয়েছেন জীবনানন্দ দাশ। তারমধ্যে দুবার সরাসরি ইঙ্গিত করেছেন বনলতা সেনের আবাসভুমি বাংলাদেশের নাটোর। কে এই নারী? কী তার পরিচয়? বনলতা সেন নামের কোনো মেয়ের সঙ্গে কি জীবনানন্দ দাশের আদৌ পরিচয় ছিল? তার চেয়ে বড় কথা কবি কি কখনো নাটোরে পদার্পণ করেছিলেন? বনলতা সেন বইটি হাতে নিয়ে গোপালচন্দ্র রায় একবার কবিকে জিজ্ঞাসাও করেছিলেন, ‘দাদা, আপনি যে লিখেছেন নাটোরের বনলতা সেন, এই বনলতা সেনটা কে? এই নামে সত্যি আপনার পরিচিত কেউ ছিল নাকি?’ প্রশ্ন শুনে শুধু মুচকি মুচকি হেসেছেন কিন্তু কোনো উত্তর দেননি কবি। বনলতা সেন বিষয়ে আজীবন এই নীরবতা বজায় রেখেছেন কবি, অজান্তেও কখনো কোনো প্রিয়জনের কাছে বনলতার কোনো কাহিনী বর্ণনা করেননি। তবে কবি নীরব থাকলেও গবেষকেরা কিন্তু হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি, বনলতা সেনের অন্বেষণে প্রাণান্ত করেছেন। কিন্তু বাস্তব তার কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাননি তাঁরা। 

ঔপনিবেশিক সমাজবাস্তবতায় জীবনানন্দ দাশ

রহমান মতি

সাম্রাজ্য বৃদ্ধির বহু অনুশীলনের একটি উপনিবেশ গঠন করা। উপনিবেশবাদ তাই প্রতিষ্ঠিত ধারণা হিসেবে বিশ্বের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রবাহটি এত পরিকল্পিত এবং বুদ্ধিবৃত্তিসমপন্ন যে বড় থেকে ছোট পরিসরে তার আয়োজন এতটুকুও স্তিমিত হয় না। ভারতবর্ষে পশ্চিমা আধুনিকতার বিকাশ গত শতকের কিছু সময় এবং বর্তমান শতকের সময়ে অভূতপূর্ব রূপান্তরের দিকে যাচ্ছে। উপনিবেশের ধারণাগুলো সেই ইউরোপীয়, ব্রিটিশদের কাছ থেকে এসে ভারতবর্ষের মননে প্রবেশ করেছে। আমরা ভারতীয় উপনিবেশ সমপর্কে একটি মন্তব্য দেখে নিতে পারি—'ভারতীয় উপমহাদেশ, উপনিবেশ সত্ত্বেও ভারতই ছিল। কিন্তু হাজার হাজার বছরের সেই ভাষা-সাহিত্য, দর্শনশাস্ত্র, তত্ত্ববিদ্যা ইত্যাদির ওপর পাশ্চাত্যবিদ্যার আক্রমণ ঘটেছিল এমন সর্বাত্মক যে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ভিতসুদ্ধ নড়ে গিয়েছিল'।

জীবনানন্দ দাশের কবিতা

জীবনানন্দ দাশের দ্বিতীয় কবিতা বই ‘ঝরাপালক’-এর দ্বিতীয় কবিতা : 

নীলিমা
        
রৌদ্র ঝিলমিল,
ঊষার আকাশ, মধ্যনিশীথের নীল,
অপার ঐশ্বর্যবেশে দেখা তুমি দাও বারেবারে
নিঃসহায় নগরীর কারাগার-প্রাচীরের পারে!