মামুন মিজানুর রহমান সুভাষ মুখোপাধ্যায় বাংলা কাব্যধারার স্রোতবিরোধী একজন কবি। মার্কসবাদী কবিতা চাষের পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি। তিরিশি জীবনবিচ্ছিন্নতার বিপরীতে বাংলা কাব্যাঙ্গনে তীব্র জীবনঘনিষ্ঠতার সূত্রপাত প্রধানত তাঁর হাতেই। েবিশ্বব্যাপী বিশ শতকীয় মার্কসবাদের উত্থান বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে বিবিধ ব্যঞ্জনা। মার্কসবাদে প্রভাবিত বাঙালি লেখকদের রচনায় চেতনে-অবচেতনে প্রকাশিত হয়েছে মার্কসীয় সাম্যবাদ। পৃথিবী জুড়ে লেখকদের অনুপ্রাণিত করেছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, আন্তর্জাতিক শিল্প-আন্দোলন ও সমকালীন নানা তাত্ত্বিক অনুষঙ্গ। যুগধর্ম ও সমকালের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া পৃথিবীর যে কোনো দেশের যে কোনো লেখকের চিরকালীন বৈশিষ্ট্য।
সাহিত্যের ইতিহাস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাঁক বদলায়। সাহিত্যের বিষয় এবং বাণী প্রায় সমাজের প্রয়োজন অনুসারে বিবর্তিত হলেও একই থেকে যায়। কিন্তু সাহিত্যের যে নান্দনিক রূপায়ণ তা প্রতিভাবান, স্বকীয়তাসম্পন্ন, ঐতিহ্যকে নবায়ন করতে ইচ্ছুক লেখকের হাত ধরে বদলায়। ফলে সমকালের শক্তিমান লেখকের বিশেষত কবির চিত্রকল্প, শব্দ, ভাষারীতি একটু অচেনা ঠেকে পাঠকের নিকট। বিশেষত গতানুগতিক পাঠকের কাছে। এখানে অচেনা বলতে বোঝানো হয়েছে তার কাব্যধারা এবং চেতনার গভীরতাকে, যা পূর্বপুরুষ কিংবা কবিতাশ্রয়ী লেখকের লেখায় ছিল না। এই পরিবর্তন এবং প্রথাবিরুদ্ধ রচনা নতুন যুগের লেখকের বর্ণনা, কথা এবং ইঙ্গিতে পরিবর্তিত হতে থাকে।
বিনয়ের কবিতা নিয়ে বলতে গেলে, তার প্রায় প্রতিটি কবিতা নিয়েই কথা বলা যায়। তিনি হয়তো অত্যন্ত সাংকেতিক ও জ্যামিতিক পৃথিবীতে বাস করে গেছেন। ফলে তিনি যাই বলুন না কেন, হয়ে যায় প্রতীকী। সকল ফুলের কাছে এত মোহময় মনে যাবার পরেও মানুষেরা কিন্তু মাংসরন্ধনকালীন ঘ্রাণ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে।
দশক ভিত্তিক কবি ও কবিতার আলোচনায় আমার সংশয় আছে। কারণ যে দশক থেকে কবি লেখা শুরু করেন তার পূর্ণতা পরবর্তী দশকগুলোতে লক্ষ্য করা যায়। পরবর্তী দশক এবং তার পরের দশকগুলোতে কবির বয়স অভিজ্ঞতা,দায়িত্ব অনুভব ও প্রকাশের সংযম ইত্যাদির পরিপক্কতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আমরা পাই শিল্পরীতির ঋদ্ধি। তবুও দশক কে ভিত্তি করে কবিদের চিহ্নিত করা হয় কাব্যনির্মাণে তাঁদের শুরুর সময় বিবেচনা করে।
‘গবেষণা মানে গল্প বলা’—এই কথাটি বহুবার ক্লাশে বলেছেন আমার শিক্ষক এবং এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ড. কাবেরী গায়েন। গবেষণা কাকে বলে? কীভাবে লিখতে হয় গবেষণাপত্র–তা একেবারে হাতে ধরে ধরে শিখিয়েছেন তিনি।
কেমন করে গল্প বুনতে হয়, গল্প বলতে হয়; কতো তার ধরণ-ধারণ, রকম-ফের ইত্যাদি তিনি বলেছেন। তাঁকে ধন্যবাদ। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই আমার মধ্যেও জেগে উঠে গল্প বলার আগ্রহ।
যোগাযোগের এই বিপুল উন্নতির মধ্যে থেকেও অজস্র মানুষ আজ একা, নিঃসঙ্গ। এই নৈসঙ্গের রূপটিও খুব আলাদা রকমেরই বলে বোধ হয়। মানুষের একাকিত্ব ও বিচ্ছিন্নতাবোধের সেই গল্পটিকে একুশ শতকের প্রথম দশকের কবিতার আধেয় বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে অন্য সকলের সাথে ভাগ করে নিতে চেয়েছি আমি।
জন অ্যাশবেরি (John Ashbery) বর্ষীয়ান মার্কিন
কবি। জন্ম ১৯২৭ সালের ২৮ জুলাই নিউ ইয়র্কের রচেস্টারে। এখনো লিখে চলেছেন। ষাটের
দশকে প্রতিষ্ঠিত নিউ ইয়র্ক শিল্পঘরানার অন্যতম প্রধান কবি। শিক্ষকতা করেছেন
ব্রুকলিন কলেজে, কবিতা পড়িয়েছেন। বার্ড কলেজে ভাষা ও সাহিত্যের চার্লস পি.
স্টিভেনসন জুনিয়র প্রফেসর হিসেবে কাজ করেছেন ১৯৮০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত।
২০০১-২০০৩ সময়কালে নিউ ইয়র্ক স্টেটের পোয়েট লরিয়েট। দ্য অ্যাকাডেমি অব আমেরিকান
পোয়েটসের চ্যান্সেলরের দায়িত্বও পালন করেছেন। সাহিত্য জার্নাল ‘কনজাংশন্স’-এর এডিটরিয়্যাল বোর্ডের সদস্য। বহু নামিদামি পুরস্কারে ভূষিত
অ্যাশবেরি বর্তমানে বসবাস করছেন নিউ ইয়র্কে।