বিনয় বর্মন
জন অ্যাশবেরি (John Ashbery) বর্ষীয়ান মার্কিন
কবি। জন্ম ১৯২৭ সালের ২৮ জুলাই নিউ ইয়র্কের রচেস্টারে। এখনো লিখে চলেছেন। ষাটের
দশকে প্রতিষ্ঠিত নিউ ইয়র্ক শিল্পঘরানার অন্যতম প্রধান কবি। শিক্ষকতা করেছেন
ব্রুকলিন কলেজে, কবিতা পড়িয়েছেন। বার্ড কলেজে ভাষা ও সাহিত্যের চার্লস পি.
স্টিভেনসন জুনিয়র প্রফেসর হিসেবে কাজ করেছেন ১৯৮০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত।
২০০১-২০০৩ সময়কালে নিউ ইয়র্ক স্টেটের পোয়েট লরিয়েট। দ্য অ্যাকাডেমি অব আমেরিকান
পোয়েটসের চ্যান্সেলরের দায়িত্বও পালন করেছেন। সাহিত্য জার্নাল ‘কনজাংশন্স’-এর এডিটরিয়্যাল বোর্ডের সদস্য। বহু নামিদামি পুরস্কারে ভূষিত
অ্যাশবেরি বর্তমানে বসবাস করছেন নিউ ইয়র্কে।
অ্যাশবেরি কুড়িটিরও অধিক কবিতার বই লিখেছেন। এর মধ্যে আছেHouseboat Days (১৯৭৭), As
We Know (১৯৭৯), Shadow Train (১৯৮১), A Wave (১৯৮৪), April
Galleons (১৯৮৭), Flow Chart (১৯৯১), Hotel
Lautrémont (১৯৯২), And the Stars Were Shining (১৯৯৪), Can
You Hear, Bird (১৯৯৫), Wakefulness(১৯৯৮), Girls on
the Run: A Poem (১৯৯৯), Your Name Here(২০০০), As
Umbrellas Follow Rain (২০০১), Chinese Whispers (২০০২), Where
Shall I Wander (২০০৫), A Worldly Country (২০০৭), Planisphere (২০০৯)
এবং Quick Question(২০১২)।
কবিতা ছাড়া তাঁর অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে Other Traditions: The
Charles Eliot Norton Lectures (২০০০) এবং শিল্পসমালোচনাগ্রন্থReported
Sightings (১৯৮৯)। এছাড়াও আছে জেমস শুইলারের সঙ্গে যৌথভাবে লেখা একটি
উপন্যাস A Nest of Ninnies (১৯৬৯) এবং কয়েকটি নাটক যার মধ্যে
তিনটি ‘The Heroes’, ‘The
Compromise’ এবং ‘The Philosopher’
(Three Plays গ্রন্থে সংকলিত)। ১৯৮৮ সালে তাঁর সম্পাদনায় বেরোয় The Best
American Poetry। তিনি কিছু অনুবাদের কাজও করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফরাসি
কবি আর্তুর রাঁবোর কবিতাগ্রন্থ Illuminations এবং পিয়েরে
মার্তোরির The Landscapist। Selected Prose (২০০৫)
তাঁর প্রবন্ধের বই।
কবি হিসেবে অ্যাশবেরি কুড়িয়েছেন বিস্তর সম্মান।
১৯৭৫ সালে সেলফ পোর্ট্রেইট ইন এ কনভেক্স মিরর-এর জন্য অর্জন করেন
পুলিৎজার; পাশাপাশি ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়োর্ড এবং ন্যাশনাল বুক ক্রিটিকস সার্কেল
অ্যাওয়োর্ড। ১৯৮৪ সালে এ ওয়েভ বইটির জন্য পান লেনোর মার্শাল
পোয়েট্রি প্রাইজ। ইংরেজি ভাষার কবিদের মধ্যে তিনিই প্রথম ব্রাসেলস থেকে দেওয়া
গ্র্যান্ড প্রিক্স দে বিয়েনাল ইন্তেরনাসিওনাল দে পোয়েজি লাভ করেন। এছাড়া তাঁর
ঝুলিতে জমা হয়েছেঃ ইয়েল ইয়াঙ্গার পোয়েটস প্রাইজ, লেভিনসন প্রাইজ, বলিঙ্গেন প্রাইজ,
ইংলিশ স্পিকিং ইউনিয়ন প্রাইজ, ফেলট্রিনেলি প্রাইজ, রুথ লিলি পোয়েট্রি প্রাইজ,
এমএলএ কমনওয়েলথ অ্যাওয়ার্ড ইন লিটারেচার, হ্যারিয়েট মনরো মেমোরিয়্যাল প্রাইজ,
গ্রিফিন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড, গোল্ডেন প্লেইট অ্যাওয়োর্ড, বিংহাম পোয়েট্রি
প্রাইজ, ওয়ালেস স্টিভেন্স অ্যাওয়ার্ড, ফ্র্যাঙ্ক ও’হারা প্রাইজ, শেলি মেমোরিয়্যাল অ্যাওয়ার্ড, রবার্ট ফ্রস্ট মেডাল
এবং আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড লেটার্স গোল্ড মেডাল। এর সঙ্গে আছে
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ফেলোশিপ, যেমন দ্য একাডেমি অব আমেরিকান পোয়েটস, ফুলব্রাইট
ফাউন্ডেশন, গাগেনহাইম ফাউন্ডেশন এবং ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশন। এছাড়া, তিনি ১৯৮৩ সালে
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের ফেলো এবং ২০১০ সালে ওয়েজলেয়ান
বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলে রাইটিং ফেলো নির্বাচিত হন।
অ্যাশবেরির মা ছিলেন স্কুলশিক্ষক এবং বাবা কৃষক।
তাঁর শৈশব কেটেছে লেইক ওন্ট্যারিওতে। পড়াশোনা ম্যাসাচুসেটসের ডিয়ারফিল্ড
অ্যাকাডেমিতে। স্কুলে থাকাকালীন সময়েই তিনি ডব্লু. এইচ. অডেন, ডিলান টমাস, ওয়ালেস
স্টিভেন্স ও বরিস পাস্তেরনাকের কবিতা পড়ে তাঁদের দ্বারা প্রভাবিত হন এবং নিজে
কবিতা লেখা শুরু করেন। সে সময়ে তাঁর কবিতা বিখ্যাত পোয়েট্রি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
এগারো থেকে পনেরো বছর বয়স পর্যন্ত তিনি রচেস্টার আর্ট মিউজিয়ামে চিত্রকলাও শিখেন।
তিনি ঠিক করেছিলেন চিত্রশিল্পী হবেন, কিন্তু হলেন কবি। পরবর্তীতে অবশ্য চিত্রকলার
বিদ্যা তাকে কবিতার পাশাপাশি চিত্রসমালোচনামূলক লেখায় সাহায্য করেছে। তিনি হার্ভার্ড
মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ
করেন। কলেজে তিনি হার্ভার্ড অ্যাডভোকেট ম্যাগাজিনের অন্যতম সম্পাদক হিসেবে কাজ
করেন। ক্যাম্পাসজীবনে অনেক কবির সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে, যারা পরবর্তীকালে কবি
হিসেবে নাম করেছেন, যেমন কেনেথ কচ, বারবারা এপ্সটাইন, ফ্র্যাঙ্ক ও’হারা, এডোয়ার্ড গোরে, রবার্ট ক্রিলি, রবার্ট
ব্লাই, ডোনাল্ড হল এবং পিটার ড্যাভিসন। ১৯৫১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা শেষে তিনি
কিছুদিন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস এবং ম্যাকগ্রহিল বুক কোম্পানিতে কপিরাইটার
হিসেবে কাজ করেন। ১৯৫৬ সালে তাঁর সাম ট্রীজ ডব্লু. এইচ. অডেন কর্তৃক ইয়েল ইয়াঙ্গার
পোয়েটস সিরিজের জন্য নির্বাচিত হয়। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর কাব্যসাধনার অনবরত
স্বীকৃতি।
১৯৬১ সালে তিনি কেনেথ কচ, হ্যারি ম্যাথিউস ও জেমস শুইলারের সঙ্গে মিলে বের করেন
সাহিত্য পত্রিকা লোকাস সোলাস। ১৯৬২ সালে অ্যানি ডান, রড্রিগো ময়নিহান ও সোনিয়া
অরওয়েলের সঙ্গে মিলে প্রতিষ্ঠা করেন আর্ট অ্যান্ড লিটারেচার, যেখানে তিনি ১৯৬৬ সাল
পর্যন্ত কাজ করেন। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত তিনি আর্ট অ্যান্ড লিটারেচারের ১২টি
সংখ্যা সম্পাদনা করেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি আর্ট ক্রিটিক হিসেবে গদ্য লিখেছেন
আর্টনিউজ, আর্ট ইন্টারন্যাশনাল এবং নিউ ইয়র্ক আর্ট রিভিউতে।
অ্যাশবেরির কবিতায় পরাবাস্তববাদের প্রভাব
অত্যন্ত প্রবল। উত্তরাধুনিক জীবন-উপলব্ধির জটিলতা তার কবিতায় মূর্ত হয়ে ওঠে ভাবনা
ও ভাষার সুতীব্র সংঘাতে। তাঁর কবিতার ভাষা অস্বচ্ছ, দূরাকাশের তারকামণ্ডলির মতো
মিটিমিটি, ফলে তা বহুমাত্রিক বিশ্লেষণের সুযোগ করে দেয়। আপাত বেখেয়ালি কিন্তু
সুনির্বাচিত শব্দাবলি প্রবাহিত হয় স্বচ্ছন্দভাবে, মেট্রোনোমিক মিটারে, মানব মননের
ওপর আলো ফেলে ফেলে। তিনি শব্দ নিয়ে খেলেন এবং খেলতে খেলতেই নির্মাণ করেন কাব্যের
ইন্দ্রজাল। তাঁর কবিতা লিরিক্যাল কিন্তু প্রায়শ দীর্ঘদেহী। এর বাক্যতত্ত্ব ও
অর্থতত্ত্ব গভীর প্রজ্ঞা ও স্বজ্ঞার সংমিশ্রণে তৈরি। তাঁর কাব্যধীশক্তি
বিচিত্রভাবে প্রকাশিত My Philosophy of Life ও Self-Portrait
in a Convex Mirror সহ অন্যান্য কবিতায়। তাঁর কবিতায় থাকে চিত্ররূপময়তা,
তবে তা আধুনিক চিত্রকলার মতো বিমূর্ত। এতে অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেশনিজমের প্রভাব
স্পষ্ট। পোয়েটিক ইমেজগুলো ছাড়া-ছাড়া ছেঁড়া-ছেঁড়াভাবে পাঠকের সামনে হাজির হয়, যা
বুদ্ধির চেয়ে বরং বোধের কাছে আবেদন তৈরি করে বেশি। ফ্র্যাঙ্ক ও’হারা তাঁর কবিতায় খুঁজে পেয়েছিলেন নিখুঁত সঙ্গীত
(faultless music) ও উপলব্ধির মৌলিকতা (originality of perception)। কবি ডেভিড
লেমান মন্তব্য করেছেন, অ্যাশবেরির কবিতায় চিত্রকলার ব্যবহার লক্ষণীয়। তিনি বস্তুকে
চিত্রিত করেন শব্দের তুলিতে যা তাঁর কবিতাকে ছবি করে তোলে। সেলফ-পোর্ট্রেট ইন এ
কনভেক্স মিরর কবিতাটি চিত্রকলা প্রভাবিত। এ নামে ষোড়শ শতাব্দীর শিল্পী ফ্রান্সেসকো
পার্মিগিয়ানিনো্র আঁকা একটি চিত্র আছে। উত্তল দর্পনে বস্তুর প্রতিফলন যেমন দেখায়,
সেভাবে আঁকা। অ্যাশবেরি তাঁর কবিতায় বলেনঃ
এটা দেখে পোপ ক্লিমেন্ট ও তাঁর সভা হতচকিত
ভাসারি অনুসারে, তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কমিশনের
কিন্তু তা হয়নি। আত্মাকে তার নিজের জায়গায় থাকতে হবে
যদিও অস্থির, জানালার কাচে বৃষ্টির শব্দ শুনে
বাতাসের চাবুক খাওয়া শরৎ পাতার দীর্ঘশ্বাস
মুক্ত হয়ে বাইরে যাওয়ার বাসনা, কিন্তু না,
এখানেই থেকে যাবে। নড়াচড়া করবে
যতো কম পারা যায়। এই হলো পোর্ট্রেট।
অ্যাশবেরির কবিতায় থাকে তাঁর যাপিত জীবনের
অভিজ্ঞতার ছাপ। তবে তিনি সরাসরি জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলেন না, বরং অভিজ্ঞতাকে
মন্থন করে বের করে আনেন জীবনের গভীর তত্ত্ব, অদেখা সত্য, যা অবচেতনের
প্রায়ান্ধকারে লুকিয়ে থাকে। লন্ডন টাইমসে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আমি জীবনের সরাসরি বিবরণ পাই না। জ্ঞান বা
সচেতনতা যেভাবে আমার কাছে হাজির হয় আমার কবিতা ঠিক তাই অনুকরণ বা পুনরুৎপাদন করে,
অনিয়মিতভাবে এবং অনির্দেশ্যতায়। আমি মনে করি না, সাজানোগোছানো কবিতা সেই
পরিস্থিতিকে প্রতিফলিত করবে। আমার কবিতা বিযুক্ত, এবং জীবনও তাই।’ অ্যাশবেরি নিয়ম ভাঙার দলে। মাই ফিলোসফি অব
লাইফে শোনা যায় সেই নিয়ম ভাঙার গানঃ
যখন আমার মনে হলো মাথার ভেতরে আরেকটি চিন্তার জন্য
পর্যাপ্ত স্থান নেই, তখনই এই মহান ধারণাটি পাওয়া গেলো -
একে বলতে পারো জীবনদর্শন। সংক্ষেপে ব্যাপারটি এই,
দার্শনিকেরা যেভাবে জীবনযাপন করেছেন সেভাবে
কিছু নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করে বাঁচা।
ঠিক আছে, কিন্তু কোন নীতিমালা?
কবিতায় দুর্বোধ্যতার পথে হাঁটার যে ঝুঁকি তা
অ্যাশবেরিকেও স্বাভাবিকভাবে মোকাবেলা করতে হয়েছে। মানবীয় যুক্তিশৃঙ্ক্ষলার বিপরীতে
অপ্রত্যাশিত শব্দবিন্যাসে অর্থকে সুদূরতমা করে তোলা কবিতার গুণ না দোষ যেহেতু তা
অমীমাংসিত, তাই তাকেও স্পষ্টতাবাদীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে। তাঁর কবিতা নিয়ে
হয়েছে তুমুল বিতর্ক। তাঁর কবিতার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে অবোধ্যতার অভিযোগ।
পরাবাস্তববাদী কবি হিসেবে তিনি পরাবাস্তববাদের নিয়মকানুনেরও ধার ধারেননি।
যথেচ্ছাচার করেছেন কাব্যদর্শন নিয়ে। আভা-গার্ড অনুসারী হিসেবে তিনি কবিতার গঠন
নিয়ে নিরীক্ষা করেছেন পাগলের মতো, যার ফল ও প্রতিক্রিয়া হয়েছে মিশ্র। কোনো কোনো
কবিতা তরতাজা হয়ে উঠেছে, আবার কোনোটি বাসি ফুলের মতো ঝরে পড়েছে। তাঁর বেপরোয়া
কাব্যনিরীক্ষার সাক্ষী The Tennis Court Oath, The Skaters, Dusk-Charged
Air এবং The Double Dream of Spring। হাডসন রিভিউতে উইলিয়াম
অ্যারোস্মিথ লিখেন, ‘অ্যাশবেরির
কবিতায় সুস্পষ্ট কোনো ধারণা খুঁজে পাওয়া যায় না। সূক্ষ্মতর ব্যঞ্জনার নামে থাকে
অসহনীয় অস্পষ্টতা, এক বিলোকায়িত অচল অসম্ভব ভঙ্গুর পৃথিবীর প্রতীতি, যার প্রধান
আবেগীয় উপাদান দুর্বল মস্তিষ্কের খেয়ালজাত।’ ২০০৯ সালে অক্সোনিয়ান রিভিউতে তাঁর সম্পর্কে বলা হয়ঃ
‘দ্য লাইব্রেরি অব আমেরিকা অ্যাশবেরির Collected
Poems (1956-1987) প্রকাশ করে তাঁকে বিপুল সম্মানে ভূষিত করেছে। কয়েক দশক
জুড়ে রাজত্ব করা সমসাময়িক মার্কিন কবিতার উচ্চ পুরোহিত এক মূর্তিমান কূটাভাস।
শিল্পসাহিত্যের প্রায় সমস্ত বড় বড় পুরস্কার বাগিয়ে তিনি কেবল বিতর্কই চাড়িয়ে
দিয়েছেন। তাঁর কবিতার কি আদৌ কোনো অর্থ আছে? প্রথাবাদী মন নিয়ে তাঁর কবিতা পড়া
বোকামিপূর্ণ সাহসিকতার কাজ, যা অর্থতাত্ত্বিক বিশ্বাসের মূলে কুঠারাঘাত করে।’
তথাপি অ্যাশবেরি বিশ্বজুড়ে আলোচিত, নন্দিত বিশেষ
করে পরাবাস্তব ও উত্তরাধুনিক ঘরানার পাঠককুলের কাছে। শব্দসম্ভারের দিক থেকে তিনি
পাউন্ড এবং হুইটম্যানকেও ছাড়িয়ে গেছেন বলে কেউ কেউ মনে করেন। কবি ও অধ্যাপক
স্টিফেন বার্ট পরিচিতি ও প্রভাবের ব্যাপকতায় তাঁকে তুলনা করেন টি. এস. এলিয়টের
সঙ্গে। নিউ ক্রাইটেরিয়নে উইলিয়াম লোগান বলেন, ‘খুব কম কবিই আমাদের অর্থের কর্দমাক্ত আকাঙ্ক্ষাকে এভাবে সুচতুরভাবে
পীড়িত করেছেন। অ্যাশবেরি আমাদের মনে করিয়ে দেন যে যারা আমাদের ভাষার্থ উপহার দেন
সেই কবিদের অধিকাংশই জানেন না তারা কী বলছেন।’ নিউ ইয়র্ক টাইমস রিভিউতে স্টিফেন কচ কবিকণ্ঠকে বর্ণনা করেন এভাবেঃ
‘অদ্ভুত ছন্দস্পন্দপূর্ণ এক স্তব্ধ, একইসঙ্গে
অবোধগম্য ও বুদ্ধিদীপ্ত, অস্ফুট ধ্বনি যা দুলে ওঠে তীব্র স্পষ্টতার পাহাড়চূড়া এবং
অবসন্ন অস্পষ্টতার জলঝাপটার মাঝখানে।’ পরাবাস্তববাদী কবিতার মহারথী হিসেবে তিনি বেঁচে থাকবেন মহৎ
কবিকুলের কাতারে। কবি রান্ডেল মান তাঁর প্রশংসায় বলেনঃ ‘জন অ্যাশবেরি সবচেয়ে প্রশংশিত ও সম্মানিত কবি -
এতে আমি পুলক বোধ করি। এই হট্টগোলের সময়ে জঞ্জালের স্তূপের ওপর বসে আছেন একজন
উদ্বিগ্ন কালো হ্যাট পরা সৌম্য পুরুষ, যেমনটা তিনি বলেছেন ওয়ারসেনিং সিচুয়েশনে।’
পথগায়ক
(Street Musicians)
একজন মারা গেলো, আর অন্য একজনের দেহ থেকে
হেঁচকা টানে খুলে নেওয়া হলো আত্মা, রাস্তায় হাঁটে
কোটের মতো কোনো পরিচয় গায়ে, চেয়ে চেয়ে দেখে
একই আনাচকানাচ, ভলিউমেট্রিক্স, ছায়া, গাছের নিচে
যতোদূর শব্দ যায় তার চেয়ে দূরে, বর্ধিষ্ণু উপশহরে
বাতাসে ও রাস্তায়, শরৎ ঝরে পড়ে সবকিছুর ওপর
পশমি বস্ত্র অখ্যাত কোনো গেরস্থের ঘরের মালামাল
ছেড়ে চলে আসে বাস্তুহারা পথে, অন্যজন অন্যকারো
দৃষ্টিগুলো টেনে নেয় নিজের চোখের ভেতরে
অবশেষে দিব্যজ্ঞান। পারস্পরিক ঘৃণা ও বিস্মৃতি।
তাই গড়পরতা একটা ভায়োলিন হাতে তুলে নেই
এটি জানে শুধু অনুষ্ঠানে গাওয়া ভুলে যাওয়া সুর
কিন্তু দাবি করে নীরস ধ্রবকচরণের সঙ্গে বাঁধা
জোরালো কথার সম্ভাবনা, বছর ঘুরে নভেম্বর আসে
ফাঁকে ফাঁকে দিন, আরো উদার, হাড়ের ওপর
আরো সহজে দৃশ্যমান মাংস, উৎপত্তির স্থান নিয়ে
আমাদের প্রশ্ন ঝুলে থাকে ধোঁয়ার মতোঃ পাইন বনে
আমরা কিভাবে পিকনিক করেছিলাম, সাগরের ধারে
যেখানে জল সবসময় গড়িয়ে আসে আমাদের দিকে
ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে, দৃশ্যপট মাখামাখি
আমরা যা হতে পারতাম সেরকম বানানোর প্রয়াস।
প্যারাডক্স ও অক্সিমরন
(Paradoxes and Oxymorons)
এই কবিতাটির কারবার একেবারে সাদামাটা পর্যায়ের
ভাষা নিয়ে
দেখো তোমার সঙ্গে কথা বলছে। তুমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকাও
অথবা ছটফট ভাব দেখাও। তোমার কিছু আছে, তবু নেই।
তুমি তাকে মনে করো, সে তোমাকে। পারস্পরিক স্মরণ।
কবিতাটি বিষাদের, কারণ এটি তোমাকে চায় কিন্তু
পায় না
সাদামাটা পর্যায় কাকে বলে? এ হলো এটাসেটা এবং অন্যকিছু
তাদের মধ্যে এক ধরনের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা। খেলা?
হাঁ, আসলে তাই, কিন্তু খেলাকে আমার কাছে মনে হয়
একটি গভীর বাইরের জিনিস, স্বপ্নে দেখা
ভূমিকা-বিন্যাস
এই দীর্ঘ আগস্টের দিনগুলোতে মহত্ত্বের বিভাজনে যেমন
প্রমাণ ছাড়া। উন্মুক্ত। আর তুমি জেনে যাবার আগেই
এটি স্রোতে হারিয়ে যায় এবং টাইপরাইটারের গল্প করে।
আরো একবার সেই খেলা। আমার মনে হয় তুমি বেঁচে আছো
আমাকে প্ররোচিত করতে, তোমার পর্যায়ে, তারপর তুমি উধাও
অথবা অন্যকোনো দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছো। কবিতা আমাকে
তোমার পাশে আলতো করে বসিয়ে দিয়েছে। তুমিই কবিতা।
পায়চারি
(Just Walking Around)
কি নাম দিয়েছি তোমার?
নিশ্চিত এখানে তোমার নাম নেই
যেমন তারাদের নাম থাকে তাদের মতো
কেবলই পায়চারি।
কৌতূহলের বিষয় বটে
কিন্তু তুমি অতি ব্যস্ত
আত্মায় গোপন কালির দাগ
বকবক করা আর ঘুরে বেড়ানো।
নিজের ও অন্যের দিকে তাকিয়ে হাসা
কীরকম একা একা লাগে
দূরে দূরে, প্রতিউৎপাদনশীল
আবারও তা টের পাওয়া যায়।
দীর্ঘতম পথটিই সবচেয়ে ভালো
দ্বীপপুঞ্জের মাঝখানে, আর
চক্রাকারে ঘুরছো তো ঘুরছোই
পথের শেষপ্রান্তে এলে বুঝি।
কমলার মতো দোল খেয়ে চলা
এখানে আছে আলোক রহস্য খাবার
দেখে যাও
আমাকে দেখতে এসো না
কিন্তু আমি যদি সেখানে থাকি
তবে দুজনের দেখা হলে মেনে নিও।
রাতে অদ্ভূত ঘটনা ঘটে
(Strange Things Happen at Night)
বেশি ভাবনাচিন্তা না করে
তোমার স্বপ্নের শহরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হও
ওপরে তাকাও, প্রথমে তারা তোমাকে দেখতে পাবে না
তারপর খাপ খেয়ে যাবে
তোমার ছেলেবন্ধু ভেষজ চা পান করে।
ইতোমধ্যে সংখ্যাটি হয়তো চলে এসেছে
হয়তো অঝোর বৃষ্টিতে তা আটকে গেছে,
মন্দা। সেখানে তো আছি গাদা গাদা
আমরা দ্বিগুন হবো অথবা মরবো।
সুদূর হলেও সেটি বাস্তব সমাধান
প্রতিদিন তো আর সাইকেলে চড়ে মানুষের সার
পেড়িয়ে যাও না, গ্র্যান্ড হোটেলগুলো দেখো না
হারানো নয়, কোনো এক আসন্ন চিন্তায়।
আমি তোমাকে পরিমাণে বাড়িয়ে দিতে পারি
কিন্তু এটা তো জীবনযাপন নয়
সাতটি মোডে অথবা গ্রেডে নৈশভোজ
সাঙ্গপাঙ্গসহ বসেরা চলে গেলে
অনেকেই টিকে থাকতে পারে।
আহাম্মক
(The Idiot)
ওহ কী গম্ভীর উদাসীন পৃথিবী
আমার ব্যাপারে অজ্ঞ। এই পাহাড় ঘরবাড়ি
আমার মাংসের স্পর্শ বোঝে না
কোনো গাছের ছায়া কি আমাকে বন্ধু বলে জেনেছে
আমি ঘুরে বেড়িয়েছি বিশাল পৃথিবী
কোনো মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়নি, কোনো বন্ধু পশু
এগিয়ে এসে আমার হাতে নাক ঘষেনি
কোনো নারী চুম্বনে জানায়নি অভ্যর্থনা।
তারপরও আমি চলে গেছি
জিব্রাল্টার থেকে কেপ হর্ন
কতিপয় নাবিকের দেখা পেয়েছি
ঝড়ে নৌকার নিমজ্জন ঠেকাতে চেষ্টা করেছি
ঢেউগুলোকে, ঢেউয়ের শন্দকে বন্ধু মনে হয়েছে
যখন এরা আছড়ে পড়েছে গলুইয়ের ওপর।
প্রস্ফুটিত মৃত্যু
(Flowering Death)
দূর উত্তর থেকে শুরু করে, সামনে, ইতস্তত হাঁটে
যখন তুমি বাইরে ছিলে, মূলার মতো তীব্রগন্ধ গ্যাস
সম্ভবত তোমার নাকের ভেতরে আটকে গেছে
তোমাকে তা বের করতে হবে
নিঃশ্বাসের প্রান্তে ফুল, আলগা
ওখানে রাখা আছে
একটা আরেকটাকে থামিয়ে দেয়
অথবা চলাচলে সামঞ্জস্য আনে
এর ভেতরে সবাই পৃথক ব্যক্তি।
এটা তাদের সমবায়ী শূন্যতা
যার মধ্যে আছে ধ্বংসহীনতার আভাস
এখানে কতোটা বাস্তবতা ব্যর্থ হয়েছে
এখনো পুরনো অট্টালিকা ঝলমল করে
মরীচিকা স্থায়ী। আমরা প্রথমে বানাবো
ধারণা, তারপর ভেঙে চুরমার করবো
টুকরাটুকরা ছড়িয়েছিটিয়ে পড়বে বাতাসে
পিঠা মদ ও বন্ধুত্বের মতো পুরনো আনন্দ
আমাদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থেকে যাবে, রাতে
যাতে প্রতারণা নিয়ে আসে সবশেষ বোধ।
অস্থিরতার কবিতা
(A Poem of Unrest)
মানুষেরা জীবনের নদী যথাযথ বোঝে
অপব্যাখ্যায়, ক্রমপ্রসারমান শহরনগর
কালো ও গাঢ়, কেবলই দূরে সরে যায়।
সেই সুদূর গাঢ়তা অবশ্যই মানিয়ে যায়
আমাদের, যেভাবে ভেড়া ও ক্লোভার
খাপ খাইয়ে নেয় অন্যরকম পরিবেশে।
যেহেতু আমি নিজেকে বুঝি না, আমার
খণ্ডাংশ বোঝে পরস্পরকে, বুঝতে পারার
কোনো কারণ নেই, আমরা উভয়ে চাইলেও
কোনো উপায় নেই। এই টাওয়ারগুলো কি আছে?
আমরা সেভাবেই তাকাবো, রেখা বরাবর
চিন্তা উত্তোলিত, প্লাইউড দুর্গপ্রাকারের মতো।
বিলম্বিত প্রতিধ্বনি
(Late Echo)
পাগলামি ও প্রিয় ফুলের মধ্যে একা
আমরা দেখি লেখার কিছুই অবশিষ্ট নেই
অথবা বরং পুরনো বিষয় নিয়েই লেখা প্রয়োজন
একই প্রক্রিয়ায়, একই জিনিস বারবার পুনরাবৃত্তি করে
যাতে প্রেম চলমান থাকে এবং ধীরে ধীরে অন্যরকম হয়।
মৌমাছি ও পিঁপড়েদের বাইরে থেকে পরীক্ষা করতে হবে
দিনের রঙ ছড়িয়ে পড়ে
হাজার বার, ভিন্নভাবে, গ্রীষ্ম থেকে শীতে
গতি নামিয়ে আনে খাঁটি সারাব্যাণ্ডের পর্যায়ে
গাদাগাদি করে, জীবন্ত, বিশ্রাম নেয়।
ঠিক তখনি আমাদের জীবনের দীর্ঘস্থায়ী অমনোযোগ
চারপাশ ঘিরে সজ্জিত হয়, মিলনমুখর
এক চোখ রাখা অভিজাত বাদামি ছায়ার ওপর
গভীরভাবে আমাদের অপ্রস্তুত জ্ঞানের কথা বলে
আমাদের সময়ের একান্ত কথার যন্ত্র।
এই ঘর
(This Room)
যে ঘরে আমি প্রবেশ করলাম তা এই ঘরের স্বপ্ন
সোফার পাগুলো নিশ্চিত আমার
কুকুরের ডিম্বাকৃতি মুখচ্ছবি
আমারই যাপিত সময়ের
কিছু চকচক করছে, কিছু স্তব্ধ হয়ে আছে।
আমরা প্রতিদিন মাকারনি দিয়ে লাঞ্চ করতাম
রবিবার ছাড়া, যেদিন আমাদের দেওয়া হতো
একটি ছোট কোয়েল। কেনো তোমাকে এসব বলছি?
তুমি তো এখানে নেই।
কতিপয় গাছ
(Some Trees)
সবাই এরা দেখতে বড় চমকপ্রদ
প্রতিবেশীর সঙ্গে মেশা গদগদ
কর্ম যেন কথা বলায় ব্যস্ত থাকা
দৈবটাকে দুহাত দিয়ে সাজিয়ে রাখা।
হঠাৎ করে দেখা হলো এইযে প্রাতে
অন্য জগৎ থেকে আসা তোমার সাথে
তোমার আমার জন্য ছিলো এই নিয়তি
বৃথা চেষ্টা করে করে গাছের ক্ষতি।
এইখানে তো আমরা আছি বলতে পারি
এই থাকাটা শুধুই থাকা আভাস তারই
নাকি এটার কোনোরকম অর্থ আছে
পরশ, প্রেম ও বিশ্লেষণের ধারেকাছে।
আমরা খুশি কেউ আমাদের পায়নি খুঁজে
নির্জনতার মজা লুটি চক্ষু বুজে
শব্দাবলি ভরিয়ে রাখে নীরবতা
চিত্রপটে জেগে ওঠে হাস্যকথা।
গানে গানে মুখরিত সকালবেলা
চতুর্দিকে চোখধাঁধানো আলোর খেলা
এইভাবে যায় দিন আমাদের কথা ছাড়াই
উচ্চারণের গা বাঁচাতে উঠে দাঁড়াই।
ওবায়েদ
আকাশের সঙ্গে আমিও খানিকটা একমত। লেখাটির জন্য আমার দেওয়া শিরোনাম ছিল “জন অ্যাশবেরিঃ পরাবাস্তববাদী কবিতার মহারথী”। কিন্তু সম্পাদকের দায়িত্ব অনেক। এই বিভাগের
প্রধান তার এডিটিং অথরিটি প্রয়োগ করে লেখার ভালোমন্দের গুরুভার অংশত নিজের কাঁধে
তুলে নিয়েছেন। সম্পাদক হিসেবে শিরোনাম ও বডিতে অন্যান্য ধরনের পরিবর্তনের
স্বাধীনতা তার আছে। সেটি তার জুরিসডিকশন। মূলত আমি অ্যাশবেরির কবিতায়
পরাবাস্তববাদী উপাদানের প্রতিই বেশি দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলাম। এবং আলোচনায় সেটিই
গুরুত্ব পেয়েছে। তবে উত্তরাধুনিক বৈশিষ্ট্য যে তার কবিতায় নেই তা বলা যাবে না।
যদিও ১৯২৭ সালে জন্ম, কিন্তু তার কবিতাচর্চার কাল বিংশ শতাব্দীর সত্তর দশক থেকে
একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশম পর্যন্ত বিস্তৃত। উত্তরাধুনিক জীবনের জটিলতা তাকে
স্পর্শ করেছে এবং কবিতায়ও তার ছাপ পড়েছে। কাজেই কাব্যদার্শনিকতা এবং সময়ের
বিবেচনায় তাকে উত্তরাধুনিক কবিতামণ্ডল থেকে খারিজ করা যায় না। তবে হয়তো এভাবে বলা
যেতে পারতো, কোনো কবিকে উত্তরাধুনিক না বলে তার কবিতাকে উত্তরাধুনিক বলা বেশি
যুক্তিসঙ্গত।
তাপস
গায়েনকে বলছি, না, বিষয়টি ঠিক সামাজিক স্বীকৃতি এবং প্রতিপত্তির মধ্যে কবি
অ্যাশবেরিকে অনুভব করা নয়। লেখাটি জন অ্যাশবেরির ওপর একটি ভূমিকামূলক রচনা, যেটি
কবিকৃতি ও তার কবিতার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন। এটি ঠিক গভীর
কাব্যবিশ্লেষণ নয়। আমিও বিশ্বাস করি, পুরস্কারপ্রাপ্তি বা অন্যবিধ স্বীকৃতি একজন
কবি ও কবিতার বিচারের মানদণ্ড নয়। তবে সেই তথ্যটুকু জানা থাকলে তার সামাজিক
অবস্থান ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতার ধরনটি বোঝা যায়।
ভাই
মোস্তফা জামান, জামানা খারাপ, বাংলাদেশে বা বাংলাভাষায় অ্যাশবেরির এতোটা
পরিচিতি/প্রতিপত্তি/পাঠকপ্রিয়তা নেই যে কোনো অনুবাদক তার বই বাংলায় অনুবাদ করবেন।
অন্তত আমার চোখে পড়েনি। ছিটেফোটাতেই আমরা তুষ্ট।
কবি
মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক ও সৈকত হাবিবকে ধন্যবাদ লেখাটি পাঠ করে উৎসাহব্যঞ্জক
মন্তব্যের জন্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন