আজকের বক্তৃতার বিষয় বাখতিনের ‘ভাষার দর্শন ও সাহিত্যতত্ত্ব’ কে ঠিক করেছে জানি না; কিন্তু শিরোনামটি যথার্থ হয়েছে। বাখতিন দর্শনেরই চর্চা করেছেন; যে অর্থে দর্শন জীবন ও জগৎ সম্পর্কে সামগ্রিক বোধ-বোধি বা সিদ্ধান্ত হাজির করে, সে অর্থেই। আর কাজটা তিনি করেছেন ভাষাকে আশ্রয় করে। তাই বাখতিনের আলোচনায় ‘ভাষাদর্শন’ নামটি বেশ উপযুক্ত হয়েছে। কিন্তু দর্শন আর ভাষার দর্শনে দখল না থাকায় এ বিষয়ে কথা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি অপেক্ষাকৃত ছোট পরিসরে বাখতিনের উপন্যাসচিন্তা নিয়ে কথা বলব। আলোচনাটা সাহিত্যের নন্দনতত্ত্বের দিক থেকেই হবে।
বাখতিন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
বাখতিন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মিখাইল বাখতিনের ভাবনা-চিন্তার পটভূমি
বাখতিন সার্কেলের প্রধান ব্যক্তি তিনজন। সংস্কৃতিতাত্ত্বিক মিখাইল মিখাইলোভিচ বাখতিন (১৮৯৫-১৯৭৫), ভাষাতাত্ত্বিক ভ্যালেন্টিন নিকোলাইভিচ ভলশিনভ (১৮৯৫-১৯৩৬) এবং সাহিত্যের পণ্ডিত পাভেল নিকোলাইভিচ মেদভেদেভ (১৮৯১-১৯৩৮)। তাঁরা কাজ করতেন মুখ্যত দর্শনের ভিত্তিতে; এবং মানববিদ্যা, ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস, এবং বিচিত্র সংস্কৃতিতত্ত্ব তাঁদের কাজের মধ্য দিয়ে আলোকিত হয়েছে। তাঁদের পূর্বসূত্র পাওয়া যায় নব্য কান্টবাদ বিশেষত মারবার্গ স্কুলে, ম্যাক্স শিলার প্রমুখের ফ্যানমেনলজিতে, এবং রুশ আঙ্গিকবাদীদের কাজে। এছাড়া হেগেল আর রাশিয়ায় চালু নানা মার্কসবাদী ধারা, যেমন গিয়র্গি লুকাচ প্রমুখের কাজও তাঁদের প্রভাবিত করেছিল।
বাখতিনের পলিফনি ও দ্বিবাচনিকতার প্রয়োগ
অভিনন্দন দাস
বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিক, লেলিনের মৃত্যু সোভিয়েত ইউনিয়নকে নতুন মোড়ে এনে দাঁড় করিয়েছে। বলশেভিকরা বিভক্ত হয়েছে দুটি শিবিরে। একদিকে ‘ট্রটস্কি’ অপর দিকে ‘স্টালিন’। এমত পরিস্থিতে দ্বন্দ্ব মূলক বস্তুবাদকে এড়িয়ে যেতে পারেননি স্বয়ং বাখতিনও। তাই কখনো তিনি ধর্ম সভায় যান বির্তক লড়তে, আবার কখনও চায়ের ঠেকে বুদ্ধিজীবী বুন্ধুদের সাথে পার্টি বিরোধী আলোচনা করেন। রাতে দস্তয়েভস্কির উপন্যাস পড়েন, মাঝে মাঝে নোটস লেখেন। ছিঁড়ে ফেলেন, আবার লেখেন। লিখতে লিখতে তিনি বুঝতে পারেন-- ন্যারেটর হাওয়ায় কথা বলেন না, প্রত্যেক কথার থাকে একজন শ্রোতা, তৈরি হয় বাখতিনের দ্বিবাচনিকতা (ডায়লগিজম) তত্ত্ব।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)