ডা. সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়
পাবলো পিকাসো ও কিউবিজম
কিউবিজম
মুর্তজা বশীর
কিউবিজম (cubism)-এর মূল কথাটা কী? ইউরোপীয় শিল্পকলার ক্ষেত্রে একটি রীতি দাঁড়িয়েছিল—চিত্রে একটা কাহিনি থাকতে হবে। এবং বিশ শতকের গোড়ায় ইউরোপীয় চিত্রকলায় বিধিনির্দিষ্ট রীতিবাহুল্যের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ দেখা দেয়, তার প্রথম লক্ষণটাই ছিল এই কনভেনশনের বিরুদ্ধে। উনিশ শতকের ফ্রেঞ্চ অ্যাকাডেমির শিল্পীদের ক্ষেত্রে ছবিতে কথকতা এতটা প্রশ্রয় না পেলেও সে সময়কার অনেক ফরাসি শিল্পীর চিত্রে এমনকি কুর্বে (Gustave Courbet), মানে (Edouard Manet) বা দেগার (Edgar Degas) মতো প্রগতিশীল শিল্পীদের কাজেও প্রকৃতির হুবহু প্রতিচিত্রণের দৃষ্টিভঙ্গিটাই ছিল প্রধান।
কিউবিজম
কিউবিজম আন্দোলনে পিকাসো ও অন্য শিল্পীরা
উ ত্ত ম গু হ
একটা শিল্পধারা হিসেবে কিউবিজমের বিকাশ ঘটে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। এর শুরুটা ছিল কিছুটা বিদ্রূপাত্মক এবং সময়কালটাও ছিল সীমাবদ্ধ। তবে ইউরোপ তথা সারা পৃথিবীর ইতিহাসেই ১৯০৭ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত সময়কালটি ছিল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য এক সময়। এ সময়ের মতো সম্ভবত এমন স্মরণীয় ও বিস্ময়কর আবিষ্কার শিল্পে আর তেমন ঘটেনি যে আবিষ্কার ‘কিউবিজম’ বা ‘ঘনবাদ’ নামে পরিচিত। জ্যামিতিক আকার-আয়তনের সমাবেশ ঘটিয়ে কোনো বিশেষ বস্ত্তর ঘনত্ব বা তার ভেতর ও বাইরের রূপ এবং প্রতিটি পার্শ্বরূপ, বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে একই সঙ্গে একই চিত্রে সন্নিবেশিত করার মাধ্যমে এ শিল্পধারার সূচনাটা ঘটল। এতে সমতল ক্ষেত্র খন্ড-বিখন্ডিত ও বর্ণিল। কিন্তু তাতে বিভিন্ন মাত্রায় আলোছায়া এবং অঙ্কনরেখার পুনঃপৌনিক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে এক নবতর আঙ্গিকের চিত্রের দেখা মিলল। এ ধাঁচের ছবির গায়ে যে আকারসমূহ ফুটে ওঠে তা তাদের একটা একান্ত নিজস্ব চরিত্রের প্রকাশ ঘটাতে শুরু করল।