আর্নেস্ট হেমিংওয়ের লেখা বিখ্যাত উপন্যাস ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’ নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করেন জন স্টারগেজ। কিন্তু ছবিটি দেখতে গিয়ে লেখক বিরক্ত হন পরিচালকের ওপর, কারণ গল্পের চিত্রায়ন তার মনঃপূত হয়নি। বিস্তারিত লিখেছেন মোস্তাক চৌধুরী
১৯৫৪ সালে ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’ উপন্যাসের জন্য আর্নেস্ট হেমিংওয়ে নোবেল পুরস্কার পান। ১৯৫৮ সালে এই উপন্যাসটির গল্প নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন মার্কিন পরিচালক জন স্টারগেজ। হেমিংওয়ে চলচ্চিত্রটি দেখতে গিয়ে বিরক্ত হয়ে বের হয়ে আসেন। উপন্যাসটির চলচ্চিত্রায়ন তার মনঃপূত হয়নি। ‘ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সি’ উপন্যাসটির গঠন, ভাষা এবং কারুকাজ বলা চলে গদ্যের ছদ্মবেশে আসলে দীর্ঘ কবিতার। মানুষের পরিণত প্রজ্ঞা এবং স্থায়ী বাক্য শোকের মতো চিরন্তন, তাকে বোধহয় একমাত্র কবিতাই বহন করতে পারে অথবা বিষয়ের চাপে গদ্য গুণগতভাবেই বদলে কবিতা হয়ে ওঠে। উপন্যাটিতে টানা ৮৪ দিন মাছ ধরতে ব্যর্থ হওয়ার পর ৮৫তম দিনে এক বৃদ্ধ জেলে বিরাট আকৃতির মার্লিন মাছ ধরে।
তিন দিন ধরে সংগ্রাম চলে মাছটিকে তীরে বয়ে আনার। আর শেষ পর্যন্ত জেলেটি যে মাছ নিয়ে তীরে ফেরে তাও পূর্ণাঙ্গ মাছ না, হাঙ্গরে খাওয়া বিশাল কাঁটাসহ মাছের ভগ্নাংশ। এই মাছটিকে বয়ে আনার তিন দিনের সংগ্রাম আর ফলাফলই বলা যায় গল্পের বিষয়বস্তু। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে পাঠক অনুভব করবেন, তিনি নিজেও যেন বৃদ্ধ জেলের সঙ্গে সমুদ্রে অবস্থান করছেন। অনুভব করবেন, বৃদ্ধ হলেও ওই জেলের মধ্যে রয়েছে শক্তির বিকাশ, এই শক্তি দিয়েই শেষ পর্যন্ত মাছটাকে পরাভূত করা হয়। কিন্তু হেমিংওয়ে এখানে মানুষের দৈহিক শক্তির গর্ব প্রকাশ করেননি। তিন দিন ক্রমাগত মাছটার সঙ্গে সংগ্রাম করে জেলে মাছটাকে একসময় ভালোবেসে ফেলে। ওই মার্লিন মাছটা যেন প্রকৃতির ও প্রাণিজগতের সব মহত্ত্ব ও সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে ওঠে। বৃদ্ধ জেলে প্রকৃতির পশুপাখির সঙ্গে একটা অখণ্ড যোগসূত্র অনুভব করে। ভালোবেসেছে বলেই সে মাছটাকে মেরেছে। কারণ ইফ ইউ লাভ হিম, ইট ইজ নট এ সিন টু কিল হিম। মৃত্যু ভালোবাসার সম্পর্ককে চিরস্থায়ী করতে পারে।
হেমিংওয়ের মৃত্যু এখানে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে দেখা দেয়নি। মৃত্যু এখানে বিশ্ব প্রকৃতির সঙ্গে ঐক্যানুভূতির দ্বারস্বরূপ। এই আশার বাণী হেমিংওয়ের সাহিত্যে এনেছে নতুন বাঁক। তিনি হতাশা ও মৃত্যুর কালোছায়া থেকে সরে এসে দাঁড়িয়েছেন আশার সূর্যালোকে। ‘মানুষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে কিন্তু পরাজয় অসম্ভব’ এই বাণী সামনে রেখে হেমিংওয়ে উপন্যাসটিতে মানুষের একক ব্যক্তিত্ব, সাহস এবং জীবন্ত বৈচিত্র্যকে জয়ধ্বনির উপকরণে ভরে দিয়েছেন। কিন্তু উপন্যাসটির চলচ্চিত্রায়ন কেন হেমিংওয়ের মনঃপূত হয়নি? উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে অনুভূতির যে মাত্রায় একজন পাঠক অবস্থান করে, উপন্যাসটির বাক্য ও পরিবেশ বর্ণনা কল্পলোকে যে বিশাল ক্যানভাসের জন্ম দেয় চলচ্চিত্রটি যেন তা অনেক ক্ষুদ্র করে দিয়েছে। চলচ্চিত্রটি এগিয়েছে যতটা না চরিত্রগুলোর এক্সপ্রেশন ও বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় বিচিত্র শট দেখানোর মধ্য দিয়ে তার চেয়ে অনেক বেশি এগিয়েছে ধারাবিবরণীর মাধ্যমে। এ ছাড়াও চলচ্চিত্রের অনেক দৃশ্য মঞ্চে করা একক অভিনয়ের মতো মনে হয়েছে। উপন্যাসটি চলচ্চিত্রায়নের ক্ষেত্রে পরিচালক যেন নিজস্বতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র তৈরি করতে গেলে প্রয়োজনে গল্পকে কখনো ভাঙতে হয়, এটা বোধহয় জন স্টারগেজ বুঝতে পারেননি। যার কারণেই হয়তো উপন্যাসের লেখক আর্নেস্ট হেমিংয়ের পছন্দ হয়নি। চলচ্চিত্রটি দেখতে গিয়ে, শেষ না করেই বিরক্ত হয়েই বের হয়ে যান।
তিন দিন ধরে সংগ্রাম চলে মাছটিকে তীরে বয়ে আনার। আর শেষ পর্যন্ত জেলেটি যে মাছ নিয়ে তীরে ফেরে তাও পূর্ণাঙ্গ মাছ না, হাঙ্গরে খাওয়া বিশাল কাঁটাসহ মাছের ভগ্নাংশ। এই মাছটিকে বয়ে আনার তিন দিনের সংগ্রাম আর ফলাফলই বলা যায় গল্পের বিষয়বস্তু। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে পাঠক অনুভব করবেন, তিনি নিজেও যেন বৃদ্ধ জেলের সঙ্গে সমুদ্রে অবস্থান করছেন। অনুভব করবেন, বৃদ্ধ হলেও ওই জেলের মধ্যে রয়েছে শক্তির বিকাশ, এই শক্তি দিয়েই শেষ পর্যন্ত মাছটাকে পরাভূত করা হয়। কিন্তু হেমিংওয়ে এখানে মানুষের দৈহিক শক্তির গর্ব প্রকাশ করেননি। তিন দিন ক্রমাগত মাছটার সঙ্গে সংগ্রাম করে জেলে মাছটাকে একসময় ভালোবেসে ফেলে। ওই মার্লিন মাছটা যেন প্রকৃতির ও প্রাণিজগতের সব মহত্ত্ব ও সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে ওঠে। বৃদ্ধ জেলে প্রকৃতির পশুপাখির সঙ্গে একটা অখণ্ড যোগসূত্র অনুভব করে। ভালোবেসেছে বলেই সে মাছটাকে মেরেছে। কারণ ইফ ইউ লাভ হিম, ইট ইজ নট এ সিন টু কিল হিম। মৃত্যু ভালোবাসার সম্পর্ককে চিরস্থায়ী করতে পারে।
হেমিংওয়ের মৃত্যু এখানে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে দেখা দেয়নি। মৃত্যু এখানে বিশ্ব প্রকৃতির সঙ্গে ঐক্যানুভূতির দ্বারস্বরূপ। এই আশার বাণী হেমিংওয়ের সাহিত্যে এনেছে নতুন বাঁক। তিনি হতাশা ও মৃত্যুর কালোছায়া থেকে সরে এসে দাঁড়িয়েছেন আশার সূর্যালোকে। ‘মানুষ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে কিন্তু পরাজয় অসম্ভব’ এই বাণী সামনে রেখে হেমিংওয়ে উপন্যাসটিতে মানুষের একক ব্যক্তিত্ব, সাহস এবং জীবন্ত বৈচিত্র্যকে জয়ধ্বনির উপকরণে ভরে দিয়েছেন। কিন্তু উপন্যাসটির চলচ্চিত্রায়ন কেন হেমিংওয়ের মনঃপূত হয়নি? উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে অনুভূতির যে মাত্রায় একজন পাঠক অবস্থান করে, উপন্যাসটির বাক্য ও পরিবেশ বর্ণনা কল্পলোকে যে বিশাল ক্যানভাসের জন্ম দেয় চলচ্চিত্রটি যেন তা অনেক ক্ষুদ্র করে দিয়েছে। চলচ্চিত্রটি এগিয়েছে যতটা না চরিত্রগুলোর এক্সপ্রেশন ও বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় বিচিত্র শট দেখানোর মধ্য দিয়ে তার চেয়ে অনেক বেশি এগিয়েছে ধারাবিবরণীর মাধ্যমে। এ ছাড়াও চলচ্চিত্রের অনেক দৃশ্য মঞ্চে করা একক অভিনয়ের মতো মনে হয়েছে। উপন্যাসটি চলচ্চিত্রায়নের ক্ষেত্রে পরিচালক যেন নিজস্বতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র তৈরি করতে গেলে প্রয়োজনে গল্পকে কখনো ভাঙতে হয়, এটা বোধহয় জন স্টারগেজ বুঝতে পারেননি। যার কারণেই হয়তো উপন্যাসের লেখক আর্নেস্ট হেমিংয়ের পছন্দ হয়নি। চলচ্চিত্রটি দেখতে গিয়ে, শেষ না করেই বিরক্ত হয়েই বের হয়ে যান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন