উত্তর-আধুনিকতার ইংরেজি প্রতিশব্দ postmodernism শব্দটি ১৮৭০ সাল থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে থাকে।প্রথম ব্যবহার করেন জন ওয়টকিনস চ্যাপম্যান নামে এক শিল্পী।
এরপর জে,এম থমসন ধর্মীয় বিশ্বাসকে সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি এ শব্দটি ব্যবহার করেন। ধারণাটি তার তার উদ্ভব থেকেই জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বিতর্ক এর সাধারণ সঙ্গী। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পাশ্চাত্য চিন্তায়, বিশেষ করে দর্শন, ইতিহাস লিখন, সাহিত্য, চিত্রকলা, সমালোচনায় উত্তর আধুনিকতা গত কয়েক শত বছরের জ্ঞানকাণ্ডকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম হয়েছে।
উত্তর আধুনিকতা --বৈপরীত্য তৈরি যেমন সাদা বনাম কালো, নারী বনাম পুরুষ, উপনিবেশক বনাম উপনিবেশিত এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে। এর বদলে বহুধারণায় বিশ্বাস করে। আসলে উত্তর আধুনিকতার গাথুনি বুঝতে হলে আধুনিকতার উদ্ভব বা ইতিহাসকে বিবেচনা করতে হবে, এর ফলে উত্তর আধুনিকতা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে যাওয়ার সুযোগ থেকে যায়।
উত্তর আধুনিকতা নিয়ে আলোচনার সর্বোবৃহৎ পরিসর জুরে রয়েছে দর্শনের বিভিন্ন বিধান, জ্ঞানজগতের কয়েক শত বছরের প্রচলিত রীতিগুলোকে উত্তর আধুনিক প্রবক্তাগণ নতুনভাবে মূল্যায়ন করেন। যেমন ফ্রেডারিক নীটসে, জ্যাক দেরিদা, মিশেল ফুকু, লিওতার্দ ইত্যাদি দার্শনিকগণ আধুনিকতাকে অস্বীকার করে উত্তর আধুনিক ধারণার প্রবর্তন করেন।
এভাবে বিশ শতকে এসে ইউরোপীয় আধুনিকতার পতন ঘটে যায়। চৌদ্দশ শতক থেকে বিজয়, উপনিবেশ স্থাপন, বিজ্ঞানের উন্নতি, শিল্পবিপ্লবের ফলে যে আধুনিকতার প্রতিষ্ঠা বিশ শতকে এসে তার ক্ষয় হতে শুরু করে। নীচে উত্তর আধুনিক ধারণাটি ব্যাখ্যা করা হলো।
#মহানবাক্যকে সর্বোপ্রথম ও সর্বাগ্রে সন্দেহ পোষণ করা এবং যে কোনো প্রতিষ্ঠিত মতবাদের বিরোধিতা করা।
#উত্তর আধুনিকতা যদি অপ্রদর্শনযোগ্য জিনিস প্রদর্শন করে, তা কোনো রকম ভাবালুতার বশে করে না, বা এরকম করার ব্যাপারে কোনো সান্ত্বনা খোঁঁজে না।
#উত্তর আধুনিকতা সবসময়ই প্রচলিত মতের বিরোধীতা করে,বহুত্ববাদে বিশ্বাস করে,অবিরত আবিষ্কারে আত্মনিয়োগ করে।
#উত্তর আধুনিকতা একরৈখিক ইতিহাসকে অস্বীকার করে।
#বিজ্ঞানের বৈধতাকে নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জ জানায়।
প্রচলিত অন্যানো মতবাদের মত উত্তর আধুনিকতা কোনো মতবাদ নয়, যদিও অনেক সমালোচক উত্তর আধুনিকতাবাদ শব্দটি ব্যবহার করেছে। উত্তর আধুনিকতা একটি ধারণা মাত্র।
কৃতজ্ঞতা : দিদারুল দিদার-এর কাছে
উত্তর-আধুনিকতার পয়েন্টগুলো বেশ লেগেছে। আমি আরো ২টা পয়েন্ট যোগ করতে চাই।
উত্তরমুছুন১. ব্যক্তিসত্ত্বাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
২. স্বাভাবিকতাকে জোর দেয়া হয়।