কার্ল মার্কসের জীবন ও দর্শন

...........................................................................................................
কার্ল মার্ক্স কে নিয়ে শুধু তার জন্মমৃত্যু দিবসকে নিয়ে আলোচনা করে যদি আমরা ক্ষান্ত থাকি তবে আসলে আমরা তাকেই অপমানিত করছি! আর তার জন্মদিনে যদি আমরা শুধু তার কীর্তিকলাপ নিয়েও আলোচনা করি তবে তবুও আমরা তাকে বা তার দর্শনকে অপমানিত করছি! তাহলে আমরা তাকে নিয়ে বা এই ধরণের আজন্ম বিপ্লবীদের নিয়ে আলোচনা করতে গেলে কী নিয়ে আলোচনা করব?

আমাদের কার্ল মার্ক্সকে নিয়ে আলোচনা করতে হবে বিপ্লব বা সংগ্রামের লাইনের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি আয়ত্ত করার জন্য। শুধুমাত্র তার জন্মমৃত্যুর তারিখ বা কোনদিন তিনি কোন বই লিখেছেন বা কী কাজ করেছেন বা কী ভালো ভালো কথা বলেছেন কী ভালো ভালো কাজ করেছেন তার  আদ্যপান্ত মুখস্থ করে তা দর্শক শ্রোতাদের কাছে বলে তার জন্মমৃত্যু দিবস পালন করে আমাদের ক্ষান্ত বা সন্তুষ্ট থাকলে হবে না। বরঞ্চ তিনি তার সময়ে বিপ্লবী কাজ করার সময় বিপ্লবের তাত্ত্বিক কী দিশা প্রদান করেছিলেন এবং তা সমসাময়িক সময়ের প্রেক্ষিতে সঠিক ছিলো কিনা বা তিনি সংগ্রামের লাইন সম্পর্কে কী তাত্ত্বিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিলেন তা নিয়ে আমরা আলোচনা করে বর্তমান সময়ে সেই তত্ত্বের দৃষ্টিভঙ্গির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করলেই তবে আমাদের কার্ল মার্ক্সকে নিয়ে আলোচনা সার্থক হবে বলে প্রতীয়মান হয়।
কার্ল মার্ক্স। পুরো নাম । তিনি ১৮৮১ সালের  ৫মে জন্মগ্রহণ করেন। জন্সস্থান প্রুশিয়া (বর্তমানে জার্মান)’র রাইন শহরের ত্রিয়ার শহরে। তার পিতা ইহুদী এডভোকেট নাম:হাইনরিশ মার্ক্স । মায়ের নাম হেনরিয়েটা নি’ প্রেসবুর্গ। তিনি তার পিতামাতার ৯ জন সন্তানের মধ্যে ৩য়। তার প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ শুরু হয় ত্রিয়ার শহরের এক স্কুলে।
কার্ল মার্ক্সের শিক্ষাজীবন নিয়ে উইকিপিডিয়ায় যা লেখা হয়েছে তা নিচে তুলে ধরছি-
র্কাল র্মাক্স ১৩ বছর বয়স র্পযন্ত বাড়িতেই পড়াশুনা করেন। বাল্যকালে বাড়িতে লেখাপড়া শেষ করে  তিনি ত্রিয়ার জিমনেসিয়ামে র্ভতি হন। ১৭ বছর বয়সে সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ইউনিভার্সিটি অফ বন-এ আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করনে। তার ইচ্ছা ছিলো তিনি সাহিত্য ও দর্শন নিয়ে পড়বেন , কিন্তু তার বাবা মনে করতেন কার্ল স্কলার হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবে না। কিছুদিনের মধ্যইে তার বাবা তাকে বার্লিনের হুমবোল্ডট ইউনিভার্সিটিতে বদলিকরিয়ে দেন। সে সময় র্মাক্স জীবন নিয়ে কবতিা ও প্রবন্ধ লিখতেন, তার লেখার ভাষা ছিলো বাবার কাছ থেকে পাওয়া র্ধমতাত্ত্বিক তথা অতর্বিতী ঈশ্বরবাদেরভাষা। এ সময়ই তরুণ হেগেলিয়ানদের নাস্তিকতাবাদ গ্রহণ করেন। ১৮৪১ সালে পএিইচডি ডগ্রি লাভ করনে। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভের বিষয় ছিল  “The Difference Between the Democritean and Epicurean Philosophy of Nature” (প্রকৃতি সম্বন্ধে দমেোক্রতিোসীয় ও এপকিুরোসীয় র্দশনরে মধ্যে র্পাথক্য)।
তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া.কম

১৮৪৩ সালে তিনি জেনিফন ভেস্টফালেনকে বিয়ে করেন। ভেস্টফালেন ছিলেন অভিজাত পরিবারের মেয়ে। কিন্তু মার্ক্সকে বিয়ে করার পরে তিনি সারাজীবন মার্ক্সের সর্বহারা দার্শনিক মতবাদের সাথে অঙ্গাঙ্গি জড়িত হয়ে পড়েন। ১৮৪৩ সালের ১৯ জুন তাদের মধ্যে বিয়ে হয়।
১৮৪৩ সালের অক্টোবরের শেষদিকে তিনি প্যারিসে আসেন। এসময় ফ্রান্সের প্যারিস ছিলো ব্রিটিশ, পোলীয় ও ইতালীয় বিপ্লবীদের সদরদপ্তর। তিনিও বিপ্লবী সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। ১৮৪৪ সালের সেপ্টেম্বরে ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের সাথে তার দেখা হয়। এবং তারপর থেকে তাদের মধ্যে যে বৃদ্ধিবৃত্তিক আত্মিক বন্ধুত্ব শেষজীবন পর্যন্ত অটুট ছিলো তা এখনো বৌদ্ধিক বন্ধুত্বের সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন হয়েই রয়েছে।
প্যারিসে থাকার সময় তিনি লীগ অব জাস্ট নামক গোপন সংগঠনের পত্রিকায় লেখালেখি করেন। তিনি ইহুদী প্রশ্ন ও হেগেল সম্পর্কে এসব লেখা লিখেন। এছাড়া তিনি ফরাসী বিপ্লব ও প্রুধোর দার্শনিক মতবাদ নিয়েও এসময় পড়াশুনা করেন।
১৮৪৫ সালে ফরাসী সরকার তাকে তাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করলে তিনি বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে চলে যান। সেখানে তিনি বস্তুবাদের ইতিহাস বিষয়ে ধারণা গ্রহণ করতে পড়াশুনা করেন। সেখানে চরম অর্থকষ্টে ভুগলে ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস তাকে সহায়তা করেন।
প্যারিসে এবং ব্রাসেলসে তিনি যে পড়াশুনা করেন এবং যে অভিজ্ঞতার ঝুলি তিনি সংগ্রহ করেন তার মাধ্যমে তিনি তার সমাজবিকাশ সংক্রান্ত ঐতিহাসিক বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে  আরো পোক্ত করে তোলেন।
১৮৪৭ সালে তিনি কমিউনিস্ট লীগে যোগদান করেন। কমিউনিস্ট লীগের দ্বিতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় ঐ বছরের নভেম্বরে। তাকে সংগঠনের ইশতেহার রচনার দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি ঐতিহাসিক ’কমিউনিস্ট ইশতেহার’ রচনা করেন। তিনি উক্ত রচনার নাম দিয়েছিলেন ’কমিউনিজমের মূলসূত্র”। পওে এঙ্গেলসকে তা দেখালে তিনি উক্ত রচনার নাম বদল করে ’কমিউনিস্ট ইশতেহার’ নামটি দেয়ার প্রস্তাব করেন। কার্ল মার্ক্স এই এঙ্গেলসের প্রস্তাব মেনে নেন।
মার্ক্সস ব্রাসেলসে অবস্থান করার সময় ১৮৪৮ সালের দিকে অস্ট্রিয়ায় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে(কী আন্দোলন?)। এই আন্দোলনের ঢেউ বার্লিন, বেলজিয়া, ফ্রান্সসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের সাথে জড়িত থাকা ও লেখালেখির কারণে তিনি এবার আবার বেলজিয়াম থেকে বহিস্কৃত হন। সেখান থেকে তিনি ফ্রান্সের তৎকালীন বিপ্লবীদের আমন্ত্রণে প্যারিসে গমন করেন। ১৮৪৯ সালে তিনি জার্মানীর কোলনে ফিওে যান। সেখানে তিনি নভো রাইনিশ চাইটুঙ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নেন। পত্রিকায় সশস্ত্র সংগ্রাম ইত্যাদি বিষয়ে লেখালেখি করার কারণে জার্মান সরকার তাকে বহিস্কার করে। এরপর তিনি ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়লাভের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। অবশেষে তিনি লন্ডনে চলে যান। তিনি সেখানে বহুবছর স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। ১৮৫১ সাল থেকে তিনি আমেরিকার ’নিউ ইয়র্ক ট্রিবিউন’-এর প্রতিনিধি হিসেবে লেখালেখি করেন। লন্ডনে থেকেই তিনি দ্য ক্যাপিটাল রচনায় হাত দেন।

কার্ল মার্কসের জীবন  ও সংগ্রাম থেকে কী শিক্ষা নিতে পারি
১৮৪৮ সালে অস্ট্রিয়ায় বিভিন্ন জাতিসর্মহের সংগ্রাম ও সেখান থেকে কার্ল মার্ক্সের শিক্ষা
ক) বিপ্লব আমদানী বা রপ্তানী করা যায় না।
খ) নিপীড়িত জাতিসমূহ নিজেরা মুক্ত হতে পারে কেবলমাত্র অন্য জাতির মুক্তি আন্দোলনের সাথে একাত্মতা হবার মাধ্যমে
১৮৪৮ সালে অস্ট্রিয়ায় হাঙ্গেরীয়, পোলিশ, চেক, ইতালীয় জাতিসমূহের সংগ্রাম শুরু হয়। এই সংগ্রাম গোটা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। এই সংগ্রামে তিনি নিপীড়িত জাতিসমূহের পক্ষে অবস্থান নেন। এবং সংগ্রামকে কাছে থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন। এ সময় তিনি কিছুদিন প্যারিসে থাকাকালীন জার্মানীতে বিপ্লব সংঘটনের ক্ষেত্রে ’বিপ্লব আমদানী বা রপ্তানীর হঠকারীতা বিষয়ে প্যারিসে অবস্থানরত জার্মান বিপ্লবীদের সতর্ক করেন। জার্মান দেশটি তখন ছিলো খন্ড বিখন্ড। হস্তশিল্পীদের অধিক্য ছিলো।
তিনি বললেন, একটি জাতি যুগপৎ মুক্তি অর্জন ও অন্য জাতিসমূহকে নিপীড়ন নির্যাতন করতে পারে না। জার্মানীর মুক্তি অর্জিত হবে না যদি পোল্যান্ডের জনগণ জার্মানীর নিপীড়ন থেকে মুক্তি অর্জন না করে।
অর্থাৎ নিপীড়িত শ্রেনীর মুক্তি সম্ভব নিপীড়িত জাতির মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে।

A nation cannot become free and at the same time continue to oppress other nations. The liberation of Germany cannot therefore take place without the liberation of Poland from German oppression.
Engels, Speech on Poland (1847)
গ) ইউটোপিয় সমাজতন্ত্র ও সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে
অরি সা সিমো ও রবার্ট ওয়েন ইউটোপীয় সমাজতন্ত্রের কথা বলতেন। সমাজ বিকাশের সাথে সম্পৃক্ত মৌলিক উপাদান তথা প্রভাবক শক্তি উৎপাদনের মালিকানা, উৎপাদনের উপায় ও উৎপাদিকা শক্তি সমূহ ও শ্রেনীব্যবস্থাকে স্বীকার না করে তারা নিজেদের মনগড়া ’সৎ’ দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের চিন্তা করতেন। শুধুমাত্র সৎ থেকে বা সমাজের জন্য ভালো কিছু করার আকাঙ্খা থেকে যে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব নয় তা তারা বুঝতেন না। সম্জা পরিবর্তন করতে হলে সঠিক দার্শনিক তত্ত্বকে আয়ত্ত করার দিকে তারা নজর দিতেন না।
তারা বিশ্বাস করতেন ’কয়েকজনে মিলে ’ শ্রমিক শ্রেনীর মাঝে ’সাম্যাবস্থা’ চালু করলেই ’সমাজতন্ত্র’ বা সাম্যবাদ কায়েম হবে। কিন্তু সমাজতন্ত্র কায়েম করতে হলে প্রয়োজন সঠিক দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন রাজনৈতিক সংগ্রামের যে প্রয়োজন তা তারা অস্বীকার করতেন। তারা ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন, ধর্মঘট ও রাজনৈতিক লড়াইয়ের বিরোধিতা করতেন।
জার্মান দর্জি ভিলহেলম ভাইটলিং তিনিও সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু তার দৃষ্টিভঙ্গি চিলো লুম্পেন প্রলেতারিয়েতের।
আরো এক ধরণের সমাজতান্ত্রিক তখন ছিলেন যারা সমাজে প্রেম ও ভ্রাতৃত্ববোধের বাণী প্রচার করতেন। তারা মনে করতেন শ্রমিক ও মালিক শ্রেনীর মধ্যে প্রেম ও ভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধন সৃষ্টি হলেই যে সমাজে ’সমাজতন্ত্র’ এসে যাবে। এই সকল ভুল দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিও বিরুদ্ধেও তিনি দাড়িয়েছিলেন।

ভুল দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে দার্শনিক সংগ্রাম
ঘ) দার্শনিকদের দায়িত্ব
দার্শনিক এতদিন শুধু জগতের ব্যাখ্যা মাত্র দিয়ে আসছেন। কিন্তু জগতকে যে পরিবর্তন করতে করতে সমাজ অগ্রসর হচ্ছে তা বলা হয়নি। তিনি লেখেন, এ যাবৎ দার্শনিকরা ভিন্ন ভিন্ন রূপে জগতের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু ব্যাপারটা হলো- তাকে পরিবর্তন করতে হবে।
The philosophers have only interpreted the world, in various ways; the point is to change it.

তথ্যসূত্র: মার্ক্সিস্টস.অর্গ
ঙ) সংগ্রামের ইতিহাস রচয়িতা কারা?
ব্রুনো বাউয়ের নামে এক দার্শনিক বললেন- বাছা বাছা কয়েকজনই ইতিহাস রচনা করেন। ছোট এই দৃষ্টিভঙ্গি শ্রেনী সমাজ ও জাতির আন্দোলনের ইতিহাসকে বিভ্রান্ত করে দিতেই যথেষ্ট। কার্ল মার্ক্স এই ভুল তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করলেন। তিনি বললেন জনগণই ইতিহাস রচনা করে।

History does nothing, it ‘possesses no immense wealth’, it ‘wages no battles’. It isman, real, living man who does all that, who possesses and fights; ‘history’ is not, as it were, a person apart, using man as a means to achieve its own aims; history isnothing but the activity of man pursuing his aims..
চ) সমাজ তথা মানুষ ও প্রকৃতির ইতিহাস পরষ্পর অবিচ্ছিন্ন
ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষের বা সমাজের ইতিহাস থেকে প্রকৃতির ইতিহাসকে  বা প্রকৃতির ইতিহাস থেকে সমাজের বিকাশের ইতিহাসকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা হয়। কিন্তু কার্ল মার্ক্স এই দৃষ্টিভঙ্গিও বিরোধীতা করে বললেন- আমরা কেবল একটি বিজ্ঞানের কথাই জানি, তা হলো ইতিহাসের বিজ্ঞান। ইতিহাসকে অন্যকেউ দুইভাবে দেখতে পারে। অর্থাৎ তারা ইতিহাসকে প্রকৃতির ইতিহাস ও মানুষের ইতিহাস এই দুইভাগে ভাগ করতে পারে। কিন্তু তারা আদতেই অবিচ্ছিন্ন বা একাঙ্গিভূত। যতদিন মানুষের অস্তিত্ব থাকবে ততদিন প্রকৃতি ও মানুষের ইতিহার পরষ্পর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে।
ফয়েরবাখের তাত্ত্বিক ভ্রান্তির বিরুদ্ধে দাড়িয়ে তিনি এই কথা বলেন। ফয়েরবাখ মানুষ ও সমাজের ইতিহাসকে প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার কারনে প্রকৃতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যে মানুষের সমাজের বিকাশ সাধান হয়েছে তা অস্বীকার করেছিলেন।
We know only a single science, the science of history. One can look at history from two sides and divide it into the history of nature and the history of men. The two sides are, however, inseparable; the history of nature and the history of men are dependent on each other so long as men exist.
Marx, German Ideology (1845)

ছ) দর্শনের দারিদ্র্য
প্রুধো নামের এক দার্শনিক লিখেছিলেন দারিদ্রের দর্শন। কার্ল মার্ক্স তার বিপরীতে লিখলেন ’দর্শনের দারিদ্র্য’। প্রুধো পুজির মন্দ ভালো বেছে নেয়ার কথা বলেছিলেন। তিনি মুদ্রা ছাড়া পণ্য বিনিময় করার মাধ্যমে পুজিবাদের সংকট দূর করা যাবে বলে মত দিয়েছিলেন। তিনি শ্রেনী ব্যবস্থাকে অপরিবর্তনীয় মনে করতেন।
এখানে কার্ল মার্কস দর্শন বা দৃষ্টিভঙ্গিগত বিষয়ের প্রতি জোর দিয়ে আলোচনা এগিয়ে নিতে চেয়েছেন। তিনি সমাজের মধ্যে শ্রেনী বিভেদ ও দারিদ্র্যকে পরিবর্তনীয় বলে মত দিয়েছেন।

রাজনীতি ও অর্থনীতি বা রাজনৈতিক লড়াই ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরষ্পর সম্পৃক্ত
১৮৭১ সালে ফ্রান্সের বিপ্লব ও প্যারি কমিউন গঠন। এই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বুঝতে পারেন যে শুধুমাত্র রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাধ্যমে শ্রমিক সমাজের অধিকার আদায় বা সমাজতন্ত্র কায়েম সম্ভব নয়। রাজনৈতিক লড়াইকে বুঝতে হলে অর্থনীতি বা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বুঝতে হবে। এরপরই তিনি ব্রিটেনের জাতীয় জাদুঘর ও লাইব্রেরিতে অর্থনৈতিক বিধিব্যবস্থা বিষয়ে পড়াশুনা করেন।

রাজতৈনিক লড়াইকে এগিয়ে নিতে হলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকেও যে বুঝতে হয় এ বিষয়ে তিনি জীবনের শেষ পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছিলেন।
সংক্ষেপে কার্ল মার্কসের উপরের এই তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গিসমূহ বোঝা বা জানার মাধ্যমে বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার যথোপযুক্ত ব্যবহার করেই আমরা কার্ল মার্কসের মতবাদকে সার্থক রূপায়ন করতে পারি বলেই আমার  মনেহয়।

(উপরের বক্তব্য বা বিষয়বস্তু বিষয়ক মতামত একান্তই নিজস্ব। এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রেক্ষিত বিবেচনা করে আমি উক্ত বক্তব্য প্রদান করেছি। ধন্যবাদ)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন