আশরাফ জামান
বৈজ্ঞানিক সত্যকে সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁর প্রলেতারিয়েতের বিরাটত্ব ও ব্যক্তি মানবতার পরিচয় তুলে ধরার জন্যই মানিক কলম হাতে তুলে নেন। মধ্যবিত্ত সমাজে জন্ম নিয়ে নিজের শ্রেণীকে অস্বীকার করে নিম্নশ্রেণীর মানুষের চরিত্রকে গৌরবান্বিত করেছেন তিনি। মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে বলতেন মেকি। পদ্মানদীর মাঝি লিখবার সময়ে পদ্মানদীর মাঝিদের সঙ্গে বহুদিন একত্রে সময় কাটিয়েছেন। তাদের সঙ্গে রাত কাটিয়েছেন, খাবার খেয়েছেন।
‘অৎঃ ভড়ৎ ধৎঃ ংধশব’ শিল্পের জন্য শিল্প এ নীতিতে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বাসী ছিলেন না। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মানিক ভারতীয় কমুনিস্ট আন্দোলনের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন।
মার্কসবাদ লেলিনবাদের সাথে এভাবে তাঁর সৃষ্টির নাড়ীর যোগ। নিম্নস্তরের মানুষের জীবন কাহিনীর সংবেদনশীল রূপকার হলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা কথা সাহিত্যে তিনিই প্রথম সচেতনভাবে মার্কসবাদের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। তাঁর এই প্রয়োগ সম্পর্কে নিজেই বলেছেন, ‘মার্কসবাদের সঙ্গে পরিচয় হবার পর আরও ব্যাপক ও গভীরভাবে সে পরিবর্তন ঘটবার প্রয়োজন উপলব্ধি করি। আমার লেখায় যে অনেক ভুল-ভ্রান্তি, মিথ্যা আর অসম্পূর্ণতার ফাঁকি আগেও ছিল আমি তা জানতাম। কিন্তু মার্কসবাদের সঙ্গে পরিচয় হবার আগে এতটা স্পষ্ট ও আন্তরিকভাবে জানবার সাধ্য হয়নি।”
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসগুলিতে মার্কসীয় দর্শন ফ্রয়েডীয় যৌনচেতনা এ দুটো দিক সার্থকতভাবে বিকাশ লাভ করেছে। মার্কসের রাজনৈতিক শ্রেণী চেতনা ও অর্থনৈতিক চিন্তাধারা এতে সবচেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল। তাঁর লেখায় এসেছে নিম্ন শ্রেণীর মানুষ অর্থাৎ চাষী, জেলে, মজুরের বলিষ্ঠ জীবনের প্রবল আকর্ষণ। যা তাঁকে মুগ্ধ করেছে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণ মানিককে স্বাভাবিকভাবেই মার্কসবাদের প্রতি আকৃষ্ট করেছিল। ব্যক্তিগত জীবনে মধ্যবিত্তের দোদুল্যমান জীবনের কৃত্রিমতা তাঁর মনে বিতৃষ্ণা এনে দিয়েছিল।
শোষণ, নিপীড়িত শ্রেণী দ্বন্দ্বের অসঙ্গতিতে বিভক্ত সমাজের বিবেকবান সাহিত্যিকের কাছে মার্কসবাদ একটি আদর্শ। এই আদর্শই মানিককে মুগ্ধ করেছে। এদিক থেকে তিনি অন্য লেখকদের থেকে ভিন্ন। বাংলা সাহিত্যে এমন অনেক লেখক আছেন যাঁরা সারাজীবন চিলাসব্যসনে মত্ত থেকে বা সমাজের উঁচু স্তরে অবস্থান করেও নিম্ন শ্রেণীর মানুষদের নিয়ে লিখেছেন। লেখায় সর্বহারাদের জন্য কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জন করেছেন মানিক তাদের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র।
মানিক প্রলেতারিয়েতের গভীর সমুদ্র থেকে স্নাত। তিনি নিষ্ঠাবান মানব প্রেমিক। মানিকের ‘পদ্মানদীর মাঝি’ নিম্ন শ্রেণীর শোষিত বঞ্চিত মানব জীবনের আলেখ্য। যে জীবনে পদ্মা পারের দুঃখপীড়িত মাঝিরা সারাদিন পরিশ্রম করেও দুবেলা আহার জোগাতে পারে না। পদ্মা নদীর মাঝিদের সংগ্রামমুখর জীবনের বর্ণনা মানিক দিয়েছেন এভাবেÑ “আসে রোগ, আসে শোক।... জন্মের অভ্যর্থনা এখানে গম্ভীর নিরুৎসব বিষণœ। জীবনের স্বাদ এখানে শুধু ক্ষুধা ও পিপাসায়, কাম ও মমতায় স্বার্থ ও সংকীর্ণতায় আর দেশী মদে।”
মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করতে গেলে আমরা ‘পদ্মা নদীর মাঝি’তে দেখি অসাম্প্রদায়িক শ্রেণী চেতনার উক্তি। ‘মধ্যাহ্নে নৌকা ভিড়াইয়া রাঁন্নার আয়োজন করা হইল। নিজেদের জন্য ভাত রাধিবার ভারটা কুবেরের উপরই পড়িয়াছিল। অদূরে রন্ধনরতা রসুলের বোন নছিরনকে দেখিতে দেখিতে কুবের মনে মনে একটু আপসোস করিল। ভাবিল, কি ক্ষতি মুসলমানের হাতে রাঁন্না খাইলে? ডাঙ্গার গ্রামে যাহারা মাটি ছানিয়া জীবিকা অর্জন করে তাহাদের মধ্যে ধর্মের পার্থক্য থাক, পদ্মা নদীর মাঝিরা সকলে এক ধর্মী। গণেশ, শম্ভু ওরা সঙ্গে না থাকিলে কুবের তো নিজের জন্য রাঁধিতে বসিত না।’
এটা যেন লেখকের প্রলেতারিয়েত শ্রেণী চেতনার অস্ফুট উক্তি। এ যেন পলরবসনের সেই গানÑ
‘ডব ধৎব ড়হ ঃযব ংধসব নড়ধঃ নৎড়ঃযবৎ’.
এখানে হোসেন মিয়া চরিত্রটি অঙ্কন করেছেন লেখক মনের মাধুরী মিশিয়ে। এ জাতীয় চরিত্র বাংলা সাহিত্যে দুটি বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না।
মার্কসীয় তাত্ত্বি¡ক দৃষ্টিভঙ্গিতে লেখা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শহরতলী উপন্যাসটি। এ উপন্যাসের প্রধান স্তম্ভ যশোদার মতো চরিত্র বাংলা সাহিত্যে আর নেই। সর্বহারার আশা-আকাক্সক্ষা, স্বপ্ন এতে প্রকাশ পেয়েছে।
যশোদার মনোভাব থেকে দেখি : “রাঁন্না করিতে করিতে যশোদা ভাবে ‘না তার কুলী মজুররাই ভাল। এদের যদি আপন না করিবে আপন হইবে কারা? সত্য প্রিয়ের মতো যারা বড়লোক অথবা জ্যোতির্ময়ের মতো যারা ভদ্রলোক?.... সুবীরের মত একজন করিয়া প্রত্যেকদিন তার সঙ্গে বেয়াদবি করুক তবু যশোদা চিরদিন এদেরই ভালবাসিবে।”
যশোদার এই জন্মগত স্বভাবই শ্রেণী চেতনা। শ্রেণী হিসেবে সর্বহারাদের প্রতি মানিকের মমত্ববোধ এত তীব্র।
মার্কসীয় দর্শনের উত্তরণ ঘটেছে ‘দর্পন’ উপন্যাসে। জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের বৃহত্তর পটভূমিতে ধারা বদলের লক্ষণ রয়েছে এতে।
‘দর্পন’ উপন্যাস দেখিয়ে দেয় যে, মার্কসীয় দর্শনেই অদম্য মুক্তি সংগ্রামের ভবিষ্যতবাদী আশাবাদী পরিপ্রেক্ষিতরূপে গ্রহণ করেছেন। দর্পনে শিল্পপতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে তাঁর ছেলেই। এই উপন্যাসেই মানিক শ্রেণী সংগ্রামের দলিল রচনা করেছেন।
‘দিবারাত্রির কাব্যের’ চরিত্র সম্পর্কে বলা হয়েছে : চরিত্রগুলি কেউ মানুষ নয়, মানুষের চৎড়লবপঃরড়হ মানুষের এক এক টুকরো মানসিক অংশ। ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ উপন্যাসে শশী চরিত্রের মধ্য দিয়ে রেমান্টিক ও বাস্তব এ দুটো দিক উদ্ঘাটন করেছেন লেখক। জনৈক সমালোচক শশী চরিত্রের সঙ্গে আলবেয়ার ক্যামুর তুলনা করেছেন। অবশ্য ‘প্লেগের’ বহু পূর্বে মানিকের পুতুল নাচের ইতিকথা প্রকাশ পায়।
অহিংসা উপন্যাসে আশ্রমের ভ-ামি, ধর্মান্ধতা ও যৌন লালসার উদ্ভট কাহিনী মার্কসীয় বস্তুনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে বর্ণনা করা হয়েছে। দেশ ও পৃথিবীতে যে অগণিত মেহনতি সর্বহারা মানুষ রয়েছে যারা সমাজে ধিক্কৃত, লাঞ্ছিত, অপমানিত সেই সর্বহারাদের স্বার্থক জীবন রূপকার হলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘অৎঃ ভড়ৎ ধৎঃ ংধশব’ শিল্পের জন্য শিল্প এ নীতিতে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বাসী ছিলেন না। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মানিক ভারতীয় কমুনিস্ট আন্দোলনের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন।
মার্কসবাদ লেলিনবাদের সাথে এভাবে তাঁর সৃষ্টির নাড়ীর যোগ। নিম্নস্তরের মানুষের জীবন কাহিনীর সংবেদনশীল রূপকার হলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা কথা সাহিত্যে তিনিই প্রথম সচেতনভাবে মার্কসবাদের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। তাঁর এই প্রয়োগ সম্পর্কে নিজেই বলেছেন, ‘মার্কসবাদের সঙ্গে পরিচয় হবার পর আরও ব্যাপক ও গভীরভাবে সে পরিবর্তন ঘটবার প্রয়োজন উপলব্ধি করি। আমার লেখায় যে অনেক ভুল-ভ্রান্তি, মিথ্যা আর অসম্পূর্ণতার ফাঁকি আগেও ছিল আমি তা জানতাম। কিন্তু মার্কসবাদের সঙ্গে পরিচয় হবার আগে এতটা স্পষ্ট ও আন্তরিকভাবে জানবার সাধ্য হয়নি।”
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসগুলিতে মার্কসীয় দর্শন ফ্রয়েডীয় যৌনচেতনা এ দুটো দিক সার্থকতভাবে বিকাশ লাভ করেছে। মার্কসের রাজনৈতিক শ্রেণী চেতনা ও অর্থনৈতিক চিন্তাধারা এতে সবচেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল। তাঁর লেখায় এসেছে নিম্ন শ্রেণীর মানুষ অর্থাৎ চাষী, জেলে, মজুরের বলিষ্ঠ জীবনের প্রবল আকর্ষণ। যা তাঁকে মুগ্ধ করেছে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণ মানিককে স্বাভাবিকভাবেই মার্কসবাদের প্রতি আকৃষ্ট করেছিল। ব্যক্তিগত জীবনে মধ্যবিত্তের দোদুল্যমান জীবনের কৃত্রিমতা তাঁর মনে বিতৃষ্ণা এনে দিয়েছিল।
শোষণ, নিপীড়িত শ্রেণী দ্বন্দ্বের অসঙ্গতিতে বিভক্ত সমাজের বিবেকবান সাহিত্যিকের কাছে মার্কসবাদ একটি আদর্শ। এই আদর্শই মানিককে মুগ্ধ করেছে। এদিক থেকে তিনি অন্য লেখকদের থেকে ভিন্ন। বাংলা সাহিত্যে এমন অনেক লেখক আছেন যাঁরা সারাজীবন চিলাসব্যসনে মত্ত থেকে বা সমাজের উঁচু স্তরে অবস্থান করেও নিম্ন শ্রেণীর মানুষদের নিয়ে লিখেছেন। লেখায় সর্বহারাদের জন্য কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জন করেছেন মানিক তাদের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র।
মানিক প্রলেতারিয়েতের গভীর সমুদ্র থেকে স্নাত। তিনি নিষ্ঠাবান মানব প্রেমিক। মানিকের ‘পদ্মানদীর মাঝি’ নিম্ন শ্রেণীর শোষিত বঞ্চিত মানব জীবনের আলেখ্য। যে জীবনে পদ্মা পারের দুঃখপীড়িত মাঝিরা সারাদিন পরিশ্রম করেও দুবেলা আহার জোগাতে পারে না। পদ্মা নদীর মাঝিদের সংগ্রামমুখর জীবনের বর্ণনা মানিক দিয়েছেন এভাবেÑ “আসে রোগ, আসে শোক।... জন্মের অভ্যর্থনা এখানে গম্ভীর নিরুৎসব বিষণœ। জীবনের স্বাদ এখানে শুধু ক্ষুধা ও পিপাসায়, কাম ও মমতায় স্বার্থ ও সংকীর্ণতায় আর দেশী মদে।”
মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করতে গেলে আমরা ‘পদ্মা নদীর মাঝি’তে দেখি অসাম্প্রদায়িক শ্রেণী চেতনার উক্তি। ‘মধ্যাহ্নে নৌকা ভিড়াইয়া রাঁন্নার আয়োজন করা হইল। নিজেদের জন্য ভাত রাধিবার ভারটা কুবেরের উপরই পড়িয়াছিল। অদূরে রন্ধনরতা রসুলের বোন নছিরনকে দেখিতে দেখিতে কুবের মনে মনে একটু আপসোস করিল। ভাবিল, কি ক্ষতি মুসলমানের হাতে রাঁন্না খাইলে? ডাঙ্গার গ্রামে যাহারা মাটি ছানিয়া জীবিকা অর্জন করে তাহাদের মধ্যে ধর্মের পার্থক্য থাক, পদ্মা নদীর মাঝিরা সকলে এক ধর্মী। গণেশ, শম্ভু ওরা সঙ্গে না থাকিলে কুবের তো নিজের জন্য রাঁধিতে বসিত না।’
এটা যেন লেখকের প্রলেতারিয়েত শ্রেণী চেতনার অস্ফুট উক্তি। এ যেন পলরবসনের সেই গানÑ
‘ডব ধৎব ড়হ ঃযব ংধসব নড়ধঃ নৎড়ঃযবৎ’.
এখানে হোসেন মিয়া চরিত্রটি অঙ্কন করেছেন লেখক মনের মাধুরী মিশিয়ে। এ জাতীয় চরিত্র বাংলা সাহিত্যে দুটি বোধ হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না।
মার্কসীয় তাত্ত্বি¡ক দৃষ্টিভঙ্গিতে লেখা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শহরতলী উপন্যাসটি। এ উপন্যাসের প্রধান স্তম্ভ যশোদার মতো চরিত্র বাংলা সাহিত্যে আর নেই। সর্বহারার আশা-আকাক্সক্ষা, স্বপ্ন এতে প্রকাশ পেয়েছে।
যশোদার মনোভাব থেকে দেখি : “রাঁন্না করিতে করিতে যশোদা ভাবে ‘না তার কুলী মজুররাই ভাল। এদের যদি আপন না করিবে আপন হইবে কারা? সত্য প্রিয়ের মতো যারা বড়লোক অথবা জ্যোতির্ময়ের মতো যারা ভদ্রলোক?.... সুবীরের মত একজন করিয়া প্রত্যেকদিন তার সঙ্গে বেয়াদবি করুক তবু যশোদা চিরদিন এদেরই ভালবাসিবে।”
যশোদার এই জন্মগত স্বভাবই শ্রেণী চেতনা। শ্রেণী হিসেবে সর্বহারাদের প্রতি মানিকের মমত্ববোধ এত তীব্র।
মার্কসীয় দর্শনের উত্তরণ ঘটেছে ‘দর্পন’ উপন্যাসে। জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের বৃহত্তর পটভূমিতে ধারা বদলের লক্ষণ রয়েছে এতে।
‘দর্পন’ উপন্যাস দেখিয়ে দেয় যে, মার্কসীয় দর্শনেই অদম্য মুক্তি সংগ্রামের ভবিষ্যতবাদী আশাবাদী পরিপ্রেক্ষিতরূপে গ্রহণ করেছেন। দর্পনে শিল্পপতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে তাঁর ছেলেই। এই উপন্যাসেই মানিক শ্রেণী সংগ্রামের দলিল রচনা করেছেন।
‘দিবারাত্রির কাব্যের’ চরিত্র সম্পর্কে বলা হয়েছে : চরিত্রগুলি কেউ মানুষ নয়, মানুষের চৎড়লবপঃরড়হ মানুষের এক এক টুকরো মানসিক অংশ। ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ উপন্যাসে শশী চরিত্রের মধ্য দিয়ে রেমান্টিক ও বাস্তব এ দুটো দিক উদ্ঘাটন করেছেন লেখক। জনৈক সমালোচক শশী চরিত্রের সঙ্গে আলবেয়ার ক্যামুর তুলনা করেছেন। অবশ্য ‘প্লেগের’ বহু পূর্বে মানিকের পুতুল নাচের ইতিকথা প্রকাশ পায়।
অহিংসা উপন্যাসে আশ্রমের ভ-ামি, ধর্মান্ধতা ও যৌন লালসার উদ্ভট কাহিনী মার্কসীয় বস্তুনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে বর্ণনা করা হয়েছে। দেশ ও পৃথিবীতে যে অগণিত মেহনতি সর্বহারা মানুষ রয়েছে যারা সমাজে ধিক্কৃত, লাঞ্ছিত, অপমানিত সেই সর্বহারাদের স্বার্থক জীবন রূপকার হলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন